সোমবার, ১৪ এপ্রিল ২০২৫, ০১:২৫ পূর্বাহ্ন
বিশেষ ঘোষণা :
সময়ের সাথে সাথে প্রযুক্তিও পাল্টে যাচ্ছে ! তাই বদলাতে হচ্ছে আমাদেরও। আপনি এখন দেখতে পাচ্ছেন সিটি নিউজ পোর্টালের আপডেট ভার্সন। নতুন সাইটে আপনি আরো দ্রুততার সাথে ঝপটপ খবর পড়ে নিতে পারবেন। ২০১৬ সাল থেকে এ পর্যন্ত আমরা ছয় বার সাইট আপডেট করেছি। অনিচ্ছাকৃত ত্রুটির ক্ষমা প্রার্থণা: ওয়েব সাইটটি আপডেট করার সময় পুরনো সাইটের কমবেশি ১০ শতাংশ খবর ”ডাটালস” এর কারণে কোনও পুরনো লিঙ্ক নাও খুলতে পারে। এটা একান্তই টেকনিক্যাল গ্রাউন্ড। যে কারণে সিটি নিউজের সম্পাদকীয় বিভাগ আন্তরিকভাবে ক্ষমা প্রার্থী। সঙ্গে থাকুন।

অবশেষে কিংখানের মুক্তি, বরণ করলো লাখো জনতা

মিলন বিশ্বাস হৃদয় / ৮ বার এই সংবাদটি পড়া হয়েছে
প্রকাশের সময় : রবিবার, ১৩ এপ্রিল, ২০২৫

আজ ১৩ই এপ্রিল ছিলো বাংলা বর্ষের শেষ দিন। অর্থ্যাৎ চৈত্র সংক্রান্তি। চৈত্র মাসের শেষ খরা উত্তাপের সাথে যেন বাড়তি উত্তাপ ছড়িয়েছে নারায়ণগঞ্জের কিংখান খ্যাত জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি জাকির খান। জাকির খানের মুক্তি গোটা নারায়ণগঞ্জে যেন চৈত্রের উত্তাপকেও ছাড়িয়ে গিয়েছিলো। প্রিয় নেতার মুক্তির খবরে এদিন সকাল থেকে শত শত গাড়ী ও শত শত মটরসাইকেল নিয়ে হাজার হাজার নেতাকর্মী ও সমর্থকরা ভীড় জমায় নারায়ণগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগার ফটকের সামনে। সকাল ৯টায় নেতার মুক্তি কথা থাকলেও কারাগারের কিছু কাজ সম্পন্ন করতে বেজে যায় সকাল সাড়ে দশটা। তবুও যেন কারো চোঁখে মুখে ক্লান্তির ভাব নাই। প্রচন্ড খরতাপে মাথার ঘাম পায়ে পড়লেও অনুসারিদের চোঁখে মুখে ছিলো হাসি।

সকাল সাড়ে দশটার ঠিক ৫ মিনিট আগে যখন শোনা গেলো জাকির খান কারাগার থেকে বের হচ্ছে ঠিক তখনই হাজার হাজার নেতাকর্মী ও সমর্থকদের এক প্রকম্পিত ধ্বণি পুরো কারাগারের লৌহকপাটকেও যেন কাপিয়ে তুলেছিলো। সবার মুখে একই স্লোগান, ‘শুভেচ্ছার স্বাগতম-জাকির খানের আগমন।’ এর মধ্যে আবার চলছে ডিজে। যেন এক মহোৎসবে মেতেছে জাকির খানের অনুসারিরা।

ঘড়ির কাটায় তখন ১০ বেজে ৩০ মিনিট। হঠাৎই যেন কারাগার থেকে বের হলো জাকির খান। কি এক অদ্ভুত দৃশ্য। জাকির খানকে দেখে যেন পাগল হয়ে গেলো তার হাজার হাজার অনুসারিরা। সবাই জাকির খানকে আলিঙ্গন করার জন্য পাগলের মত আচরণ করছে। কেউ কারো কথা শুনছে না। এদিকে পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে স্বেচ্ছাসেবকদের। প্রচন্ড ধাক্কাধাক্কিতে আহত হলেও যেন কারোরই ব্যাথার অনুভোব নাই।

কারাগার থেকে সোজা একটি কালো রঙের ল্যান্ডকুইজার গাড়ীতে উঠেন জাকির খান। গাড়ীতে উঠে একহাতে ফিলিস্তিনি পতাকা অন্যহাতে দেশের পতাকা হাতে নিয়ে রওয়ানা হয় ল্যান্ডকুইজার। এসময় তার সাথে ছিলেন, তার একমাত্র পুত্র কারগিল খান ও বড় ভাইয়ের পুত্রসহ দুই চাচাতো ভাই। কিন্তু জাকির খানকে নিয়ে ল্যান্ডকুইজার রওয়ানা হলেও প্রচন্ড ভীড়ের কারণে একচুল পরিমানও যেন চলতে পারছিলো না। এসময় বার বার গাড়ীর সামনে থেকে লোকজনকে সরে যেতে মাইকিং করা হলেও কেউ তা কর্ণপাতই করছে না। ফলে গাড়ীটির প্রায় আধঘন্টা লেগে যায় শুধু মাত্র কারাগার ফটক পাড় হতেও। তবে সবচেয়ে আশ্চর্য্য ব্যাপার হচ্ছে এত ভীড় ও এত খরতাপেও বিন্দুমাত্র বিরক্ত হননি জাকির খান। তিনি গাড়ীতে থেকেই অনুসারিদের সাথে হাত মিলিয়েছেন এবং ফুলেল শুভেচ্ছা গ্রহণ করেছেন।

এদিন বলতে গেলে নজিরবিহিন এক শোডাউনের মধ্যদিয়ে জাকির খানকে বরণ করে নেন নারায়ণগঞ্জবাসী। যেন কারাফটক থেকে শুরু করে তার বাসাঅব্দি প্রতিটি মোড়ে মোড়ে লাখো জনতা ভীড় করেছিলো তাকে বরণ করে নেওয়ার জন্য। অবশেষে প্রিয় নেতার মুক্তি হলে ফুলের পাপড়ি ছিটিয়ে আবার কেউ কেউ ফুলেল মালা পড়িয়ে কিংবা তার সাথে হাত মিলিয়ে সংবর্ধণা জানান নারায়ণগঞ্জবাসী।

জাকির খান মুক্তি লাভের পর কারাগার থেকে প্রায় কয়েকশ গাড়ী বহর নিয়ে গোটা শহর প্রদক্ষিণ করে সোজা চলে যান বাপ-দাদার কবরস্থানে। পশ্চিম দেওভোগস্থ নিজ বাড়ীর পাশে ছোট্ট একটি পারিবারিক কবরস্থানে শায়িত আছে তার দাদা সাকিম আলী ও বাবা দৌলত হোসেন খান। জাকির খান দেওভোগে পৌছলে গাড়ী বহর থেকে নেমেই সোজা চলে যান সেখানে। প্রথমে বাপ-দাদার কবরে ফুলের পাপড়ি ছিটিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। পরে তাদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করে দোয়া করেন তিনি। এসময় তার আত্মীয় স্বজনরা উপস্থিত ছিলেন। দোয়া শেষে দীর্ঘ প্রায় ২২ বছর পর পাঁ রাখেন নিজ বাসায়। এসময় তাকে দেখে তার মা সহ অন্যান্য আত্মীয় স্বজনরা আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েন। কেউ কেউ আনন্দে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। আবার কেউ কেউ জাকির খানকে জড়িয়ে দীর্ঘ ২২ বছরের অপূর্ণতা মেটানোর চেষ্টাও করেন। এসময় এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের তৈরি হয়। যা দেখে উপস্থিত অনেকের চোঁখেও পানি এসে যায়।

কারা মুক্তির পর জাকির খান বলেন, আমি তারেক রহমানের ৩১ দফা বাস্তবায়নে সবাইকে একসাথে নিয়ে কাজ করবো। আর আমাদের মুসলিম উম্মার প্রথম কাজ ফিলিস্তিনে যা হচ্ছে তার প্রতিবাদ করা। বর্তমান প্রশাসনকে সহযোগিতা করে মানবিক নারায়ণগঞ্জ গড়ে তুলবো। বিগত সময়ে ফ্যাসিবাদ হাসিনা সরকারের প্রতিহিংসার রাজনীতির শিকার ছিলাম আমরা, আমাদের পরবর্তী জেনারেশন যেনো তেমন প্রতিহিংসার শিকার না হয় সেটাই চেষ্টা করবো।

এর আগে জাকির খানের আইনজীবী অ্যাডভোকেট রবিউল ইসলাম বলেন, “জাকির খানের বিরুদ্ধে ৩৩টি মামলা ছিল। এরমধ্যে ৩২টিতে তিনি খালাস পেয়েছেন। বাকি ১টি মামলায় আজ তিনি সাজা শেষ করে মুক্তি পেয়েছেন।

প্রসঙ্গত, ২০২২ সালের ৩ সেপ্টেম্বর র‌্যাব-১১ এর একটি অভিযানে ঢাকার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয় জাকির খানকে। এরপর ধাপে ধাপে বিভিন্ন মামলায় জামিন পান তিনি। চলতি বছরের ৭ জানুয়ারি সাব্বির আলম হত্যা মামলার রায়ে খালাস পান তিনি।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ

বিভাগীয় সংবাদ এক ক্লিকেই