নানা চড়াই উৎরাই পাড় হয়ে নানা প্রতিকুলতার মুখেও দাদা জালাল হাজীর ঐতিহ্য রক্ষায় এগিয়ে চলেছেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও সাবেক কাউন্সিলর আবুল কাউসার আশা। বর্তমানে রাজনীতির মাঠে প্রতিপক্ষের সাথে সমানতালে প্রতিযোগীতা করে যাচ্ছেন তিনি। সম্প্রতি বিশাল শোডাউনের মধ্যদিয়ে নিজের জনপ্রিয়তার কথাও জানান দিয়েছেন তিনি। কিন্তু তার এই এগিয়ে যাওয়ার পথে এখন প্রধান বাধা হয়ে দাঁড়াতে দেখা গেছে তারই চাচা মহানগর বিএনপির বহিস্কৃত নেতা আতাউর রহমান মুকুলকে।
মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে বন্দরে সর্ববৃহৎ র্যালির ডাক দিয়ে ছিলেন, আবুল কাউসার আশা। সেই র্যালিতে নেতাকর্মী ও সমর্থকদের ভালোই সাড়া পেয়েছিলেন তিনি। সেই র্যালিতে তার চাচা মুকুলেরও অংশগ্রহণ করার কথা ছিলো বলে জানাগেছে। কিন্তু হঠাৎ করে একই স্থানে পৃথক র্যালি করার ঘোষণা দেন তার চাচা মুকুল। ফলে অনেকটা বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়েন আশা। পরে বন্দর থেকে র্যালি ঘুরিয়ে এনে শহরে করার সিদ্ধান্ত নেন আশা। ১৬ই ডিসেম্বর বেলা ১১টায় শহরের মন্ডলপাড়া এলাকা থেকে আশার নেতৃত্বে বের করা হয় সেই র্যালি। আর অপরদিকে বন্দরে মুকুলের নেতৃত্বেও র্যালি বের করা হয়। এতে কালামপন্থি বিএনপি নেতাকর্মীদের মাঝে বিভক্তির সৃষ্টি হয়।
জানাগেছে, নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সাবেক সাংসদ ও মহানগর বিএনপির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট আবুল কালামের ছিলো হাজার হাজার অনুসারী। রাজনীতি থেকে অনেকটা নিস্ক্রিয় হয়ে যাওয়ায় তার এ অনুসারীরা আশা ও মুকুলের সাথে রাজনীতি শুরু করে। বিজয় দিবসে সেই কালামপন্থি প্রায় এক তৃতীয়াংশ বিএনপি নেতাকর্মীরা ছিলো আশার সাথে, আর একাংশ যোগদেয় মুকুলের র্যালিতে। এতে নতুন করে কালামপন্থি বিএনপির নেতাকর্মী ও সমর্থকদের মাঝে বিরোধ সৃষ্টি হতে দেখা গেছে। তারা এখন কি করবেন, কার পিছনে রাজনীতি করবেন এ নিয়েও সংশয়ে আছেন বলে জানাগেছে।
এ বিষয়ে কালামপন্থি বেশ কয়েকজন নেতাকর্মীরা বলেন, এখানে আমরা আশার কোন দোস দেখিনা। তিনিতো আগেই ঘোষণা দিয়েছিলেন বন্দরে র্যালি করবেন। কিন্তু দ্বন্দ্বটাতো সৃষ্টি করলে মুকুল সাহেব নিজেই। কি কারণে তিনি হঠাৎ করে পৃথক র্যালি করার ঘোষণা দিলেন, আমরা সঠিক জানিনা। তিনিতো আশার চাচা, তাই তার বিষয়ে বেশি কিছু বলা আমাদের ঠিক হবে না। কিন্তু তিনি সত্যিই কাজটা ভালো করেন নি।
তারা বলেন, আমরা কালাম সাহেবের রাজনীতিতে জড়িত ছিলাম। সেই অনুযায়ী আশাও আমাদের আপন, আর মুকুল সাহেবও আমাদের দূরের কেউ না। আমরা তাদের দু’জনারই লোক বলা চলে। কিন্তু তাদের চাচা-ভাতিজার মধ্যে যে একটা মল্লযুদ্ধ চলছে, সেটা প্রকাশ না হলেও বলার অবকাশ রাখেনা। আসলে এ মহুর্তে এই যুদ্ধ বন্ধ করতে হবে। সামনে নির্বাচন। সেই নির্বাচনে আমরা আশা করছি কালাম সাহেব কিংবা তার পরিবারেরই যে কোন একজন মনোনয়ন যুদ্ধে নামবেন। তাই সকল মতপার্থক্যকে দূরে ঠেলে এখন উচিৎ হবে কাঁধে কাধ মিলিয়ে একসাথে রাজনীতির মাঠে থাকা। নয়তো, এই মতপার্থক্যের মাসুল শুধুমাত্র তাদেরই নয়, আমরা যারা তাদের রাজনীতির সাথে জড়িত আমাদের সবাইকেই এর মাসুল দিতে হবে।
তবে এ মতপার্থক্য নিয়ে এখনও পর্যন্ত মুখ খোলছেন না চাচা-ভাতিজা। এ বিষয়ে তাদের নিজেদের মধ্যে আলোচনা চলছে বলে বিশ^স্ত একাধীক সূত্রে জানাগেছে।