নারায়ণগঞ্জে আলোচিত ব্যবসায়ী সাব্বির আলম খন্দকার হত্যা মামলার আসামী জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি জাকির খানকে এবারও আদালতে আনা হয়নি। রোববার (২৫ আগষ্ট) অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ (প্রথম আদালত) উম্মে সারবান তাহুরার আদালতে জাকির খানকে হাজির করার কথা থাকলেও এদিনও নিরাপত্তার কারণে গাজীপুর কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারারগার থেকে তাকে আদালতে আনা হয়নি। আসামী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট রাজীব মন্ডল এ তথ্য জানিয়েছেন।
এদিকে আদালতে জাকির খানের হাজির হওয়ার তারিখ থাকায় এদিনও আদালতপাড়া ও এর বাইরে (ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোড) তার হাজার হাজার কর্মীসমর্থকরা ভীড় জমায়। কিন্তু জাকির খানকে না আনায় ক্ষোপে ফেটে পড়েন তারা। পরে জকির খান মুক্তি পরিষদ নেতাকর্মীরা ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোড (চানমারি) থেকে একটি বিশাল প্রতিবাদ মিছিল বের করে। এসময় মিছিলে জনস্রোতের সৃষ্টি হয়। নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন থানা ও পাড়া মহল্লা থেকে হাজার হাজার কর্মীসমর্থকরা মিছিলে যোগ দেয়। মিছিলে বিএনপির পতাকা হাতে নিয়ে হাজার হাজার কর্মীসমর্থকদের শ্লোগানে প্রকম্পিত হয়ে উঠে চানমারিসহ আশেপাশের এলাকা। পরে মিছিলটি নারায়ণগঞ্জের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে জেলা ও মহানগর বিএনপির সাবেক কার্যালয়ের সামনে গিয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মধ্যদিয়ে শেষ হয়।
সমাবেশে বক্তরা বলেন, জাকির খানকে নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে আজও আদালতে আনা হয়নি। এভাবে তারিখের পর তারিখ যদি তাকে আদালতে না আনা হয়, তাহলে বিচারকার্যে ধীরগতি দেখা দিবে। আমরা চাই আওয়ামী লীগের দালালদের করা এ মিথ্যা মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি হোক। কেননা, আমরা বিশ্বাস করি, ওই দালালদের মিথ্যা মামলায় জাকির খান মুক্তি লাভ করবে। কিন্তু এভাবে তারিখ দিয়ে মামলার কাজ পেছানো হলে জাকির খানের মুক্তি বিলম্বিত হবে। তাই আগামী তারিখ থেকে জাকির খানকে নিয়মিত আদালতে তোলার জন্য কারাকর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানাচ্ছি।
বক্তারা বলেন, মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব টিপু (আবু আল ইউসুফ খান টিপু)। ওনি নারায়ণগঞ্জ বিএনপিকে ধ্বংস করার জন্য জায়গা জায়গা বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে উল্টাপাল্টা কথা বলে বেড়ায়। ওনি আজ আবার আমার নেতার পিছনে লেগেছে। আমরা বলতে চাই, সাবধান হয়ে যান। জননন্দিত এ নেতার বিরুদ্ধে যদি আর কোন ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হবেন, তাহলে পরিনাম শুভ হবে না।
নেতৃবৃন্দরা হুশিয়ার দিয়ে আরও বলেন, জাকির খান নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সাবেক সফল সভাপতি। তাকে নিয়ে উল্টাপাল্টা বক্তব্য দেয়ার আগে আপনি নিজের দিকে তাকান। আপনি বিদিশার বাড়ীতে রাতে ভাত খান, মিটিং করেন। আবার বলেন আপনি মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব। আমরা মনে করি, মহানগর বিএনপির সদস্য হওয়ার যোগ্যতাও আপনার নাই। আপনাকে স্পষ্ট ভাষায় বলে দিচ্ছি, আপনি যদি আর জাকির খানকে নিয়ে কুটক্তি করেন তাহলে আপনাকে যেখানে পাওয়া যাবে, সেখানেই সায়েস্তা করা হবে।
বক্তারা বলেন, নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সাবেক সফল সভাপতি জাকির খানের জনপ্রিয়তা দেখে ঈর্শন্বিত হয়ে মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব টিপু বিভিন্ন অনুষ্ঠানে মিথ্যা অপপ্রচারের মধ্যদিয়ে নীল নকশায় মেতে উঠেছেন। আজকের এ সমাবেশ থেকে বিগত দিনে আওয়ামী লীগের যারা ফর্মা ছিলো তাদেরকে বলে দিতে চাই, ছাত্র-জনতা রক্তের বিনিময়ে যে নতুন স্বাধীনতা এনেছে। ওই রক্তের দাগ শুকাবার আগে যদি কেউ বিএনপির নাম ভাঙ্গিয়ে চাঁদাবাজী, দখল, অন্যায় ও অপপ্রচারের লিপ্ত হন, কঠোর জবাব দেয়া হবে।
জাকির খান মুক্তি পরিষদের আহ্বায়ক সলিমুল্লাহ্ করিম সেলিমের সভাপতিত্বে এসময় উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মৎস্যজীবী দলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও ঢাকা দক্ষিন মৎস্যজীবী দলের আহ্বায়ক মো: শাহআলম, ১নং যুগ্ম আহ্বায়ক ফরিদ আহমেদ, যুগ্ম আহ্বায়ক মির্জা খোকেন, মো: শাহজাহান, মো: নাসির, মো: সেন্টু, সদস্য মো: মহিউদ্দিন, মো: আহম্মদ হোসেন, সদর থানা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক লিংকন খান, জেলা মৎস্যজীবী দলের সভাপতি এইচএম হোসেন, জাকির খান মুক্তি পরিষদ নেতা আমিনুল ইসলাম, মহানগর মৎস্যজীবী দলের যুগ্ম আহ্বায়ক শ্রী ঋষিকেশ মন্ডল মিঠু, জেলা যুবদলের সাবেক সহ সভাপতি পারভেজ মল্লিক, সদর থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক কাঞ্চন আহমেদ, স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা শুক্কুর আলী বেপারী, মো: কালাম, মো: কাইয়ূম ও জেলা ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক রাকিব হাসান রাজ, নারায়ণগঞ্জ জেলা মৎস্যজীবী দলের সিনিয়র সহ সভাপতি মুন্সী মো শাহজালাল, সহ সভাপতি আজিজুল হক, ফতুল্লা থানা মৎস্যজীবী দলের সভাপতি সলিমুল্লাহ হৃদয়, সাধারণ সম্পাদক জুনায়েদ শুভ, সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ ফয়সাল বেপারী, বন্দর উপজেলা মৎস্যজীবী দলের সভাপতি মো হাসান মাহমুদ ও সাধারণ সম্পাদক মো রুবেলসহ আরও অনেকে।