চাঁদাবাজে নারায়ণগঞ্জ ভরে গেছে, একটারও পিঠের চামড়া থাকবে না: মাও. ফেরদাসুর রহমান
জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি মুফতি মনির হুসাইন কাসেমী বলেছেন, এতদিনের জটবাধা সন্ত্রাস মাদক আরও কত কিযে আছে এতগুলোকে দূর কতদিনে করতে পারবো তা জানিনা, আর আপনাদের তিলোত্তমা শহর বানিয়ে দিতে পারবো কি জানিনা। কিন্তু উলামায়ে ক্বেরামের পক্ষ থেকে ঘোষণা যাচ্ছে, উলামায়ে ক্বেরাম যদি ক্ষমতায় আসে আমাদের সিদ্ধিরগঞ্জ এবং ফতুল্লাতে ইনশাআল্লাহ্ কোন ধরনের সন্ত্রাস এবং মাদককে থাকতে দেয়া হবেনা। কোন টেন্ডারবাজ আর চাঁদাবাজকে এখানে জায়গা দেয়া হবেনা। এই দুই এলাকায় জলাবদ্ধতা আর যানজটকে ভাঙা হারিকেন দিয়ে খোঁজে পাবেন না।
শুক্রবার (২৪ জানুয়ারী) বিকালে ফতুল্লা থানাধীন রঘুনাথপুর এলাকায় এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। জমিয়তে ইসলাম বাংলাদেশ কুতুবপুর ইউনিয়ন শাখার উদ্যোগে ‘স্বপ্ন সম্ভাবনার নারায়ণগঞ্জ বিনির্মানে আমাদের করনীয় শীর্ষক’ এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় মনির হুসাইন কাসেমী বলেন, জলাবদ্ধতা থাকে কেন? মানুষ পয়সা দিয়ে কি করে, বালু ফেলে। কিন্তু যেহেতু বালু ফেলতে গেলে চাঁদা দিতে হয়, এজন্য মানুষ বাড়ী করেনা ভাড়া থাকে। যদি এ নিশ্চয়তা থাকতো যে বালু ফেলার জন্য কেউ চাঁদা নেবে না, কাজ ধরার চাঁদা নেবে না। সিমেন্ট আর রড বিক্রি করবে কে, সেখানেও টেন্ডারবাজী চাঁদাবাজী। এগুলো থেকে মুক্তি পাবে যদি এতটুকুও নিশ্চয়তা পেতো তাহলে জামতলায় ভাড়া থেকে রঘুনাথপুরে বাড়ী করে ফেলতো।
তিনি আরও বলেন, আমাদের নারায়ণগঞ্জ সবচাইতে ধনী জেলা। তাহলে এ জেলায় বেকারত্ব থাকবে কেন? এটাতো প্রশ্নই আসে না। উলামায়ে ক্বেরাম ক্ষমতায় আসলে পুরো নারায়ণগঞ্জ থেকে বেকারত্বকে আর ভিক্ষাবৃত্তিকে বাই বাই টা টা বলে দেওয়া হবে, ইনশাআল্লাহ্। বিদ্যুৎ থাকেনা, ঘন্টায় ঘন্টায় বিদ্যুৎ থাকেনা। বিদ্যুৎ ৫ মিনিটের জন্য যেতে পারবে না। আমরা যদি এ ধরনের দেশ চাই, এ ধরনের শহর চাই, তাহলে আপনি আর আমি গোটা নারায়ণগঞ্জবাসী হিন্দু-মুসলমান, বৌদ্ধ-খ্রিস্টান যারা যারা বাসকরি সবাইকে উদ্যোগ নিতে হবে।
প্রধান আলোচকের বক্তব্যে জমিয়তে ইসলাম বাংলাদেশ নারায়ণগঞ্জ জেলার সাধারন সম্পাদক মাওলানা ফেরদাউসুর রহমান বলেন, কথা দুইটা। একটা স্বপ্ন আরেকটা বাস্তবায়ন। কখনো কখনো কেউ আমাদেরকে স্বপ্ন দেখিয়ে আমেরিকা বানিয়েছে। আবার কখনো কখনো এই ৫৩ বছরের ইতিহাসে আমাদের বাংলাদেশকে স্বপ্ন দেখাতে দেখাতে লন্ডন বানিয়েছে। আবার কখনো কখনো আমরা এমন একটি পর্যায় গিয়ে স্বপ্ন পৌছছে ৫ আগস্টে স্বপ্ন ভাঙার পর দেখি আমি ড্রেনে পড়ে আছি। ময়লা-মশা ধুয়া মানে নোংরামি করার আর শেষ নাই। তাহলে ৫৩ বছর যারা আমাকে স্বপ্ন দেখালো বুঝাগেলো, যে দলই আসছে যে দলই স্বপ্ন দেখাইছে এগুলো সব ভূয়া আর অবাস্তব। তাহলে এ ৫৩ বছর যারা আমাদের স্বপ্ন দেখাইলো, তারাতো আমাদের এ দেশেরই সন্তান। কোথায়? কেউ পালিয়ে বেড়াচ্ছে, কেউ আত্মগোপনে আছে। আমাদের ভূমিকাটা কি, আমরা কি বলতেছি? আমরা মসজিদের মিম্বারে বাস্তবায়নের কথা বলি, আমরা রাজপথে বাস্তবায়নের কথা বলি। আমরা এ দেশকে শুধু স্বপ্ন দেখাই না। তা বাস্তবায়নের জন্য মাঠে ময়দানে কাজ করি। এ বাস্তবায়নে বাধা হচ্ছে কিছু রাজনৈতিক সংগঠন, এ বাস্তবায়নে বাধা হচ্ছে যারা লেজুরভিত্তিক রাজনীতি করেন, যারা প্রভূদের আশা আকাঙ্খা বাংলাদেশে বাস্তবায়ন করতে চায়, যারা কিছু দালাল সিন্ডিকেট তৈরি করে আমার বাংলাদেশকে কুক্ষিত করে রাখতে চায়।
তিনি বলেন, আমরা আজকে একটি স্পষ্ট বার্তা দিতে চাই, আগামী দিনে কোন টেন্ডারবাজ-চাঁদাবাজ যদি আসে তাহলে তাকে তাঁরখাম্বার (বৈদ্যতিক তারের খুটি) মধ্যে বেধে রেখে আলেম উলামাদের খবর দেবেন, সেখানেই শায়েস্তা করা হবে। আমরা শুনতে পারছি, চাঁদাবাজে নারায়ণগঞ্জ ভরে গেছে। আমরা শুনতে পাচ্ছি আগামী দিনে কারা নাকি ক্ষমতায় আসতেছে, ওই ক্ষমতার দোহাই দিয়ে দিয়ে আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, আমার শান্ত নারায়ণগঞ্জকে অশান্ত করে তোলছে আল্লাহ্’র কছম করে বলি আলেম উলামারা জাগ্রত হয়েছে একটারও পিঠের চামড়া থাকবে না।
বক্তব্য শেষে দেশাবাসীর মঙ্গল কামনায় বিশেষ দোয়া অনুষ্ঠিত হয়।
জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম কুতুবপুর ইউনিয়ন শাখার আহ্বায়ক মাওলানা নাজমুল হাসান মাহফুজের সভাপতিত্বে সভায় উপস্থিত ছিলেন, সাইনবোর্ড শাখার মারকাজে তালিমুল কোরআনের মুহতামিম আল্লামা আব্দুর রশিদ খাঁন ও দারুস সুন্নাহ মাদরাসার মুহতামিম মাওলানা সাঈদ আহমদ জুনাঈদ, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম নারায়ণগঞ্জ মহানগর শাখার সভাপতি কামাল উদ্দীন দায়েমী, সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মুনাওয়ার হোসাইন, হেফাজতে ইসলাম নারায়ণগঞ্জ মহানগর শাখার শাখার সভাপতি মুফতি হারুন অর রশিদ, যুব মজলিসের কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক মাওলানা ফাতিহ মোহাম্মদ সোলাইমান ও যুব মজলিসের বৃহত্তর গোদনাইল জোনের সভাপতি মুফতি নুরুল আমীনসহ জমিয়তে ইসলাম বাংলাদেশ ও হেফাজতে ইসলামে নেতাকমীরা।