ফতুল্লা থানাধীন জামতলা এলাকায় জামান পয়েন্ট এর বিল্ডিংয়ের নিচতলায় পার্কিং স্পেস বুঝিয়ে দেয়ার কথা থাকলেও তা না দিয়ে বিভিন্ন সময়ে টালবাহানা করে আসছিলেন ডেভলপার কাজি আরমান। এ বিষয়কে কেন্দ্র করে ফ্লাটের মালিককে বহিরাগত লোক দিয়ে মারধর করে রক্তাক্ত জখম করা অভিযোগ পাওয়া গিয়েছে ডেভলপার কাজি আরমানের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ডেভলপার কাজি আরমানগংদের বিরুদ্ধে ফতুল্লা মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী মো.মাইনুল চৌধুরী।
জামতলা এলাকার ফজল করিম চৌধুরীর ছেলে মো.মাইনুল চৌধুরী তার লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেন যে, থানাধীন জামতলা সাকিনস্থ জামান পয়েন্ট নামক ৯ম তলা বিশিষ্ট ভবনের ৬ তলায় ১টি ফ্ল্যাট ক্রয় করিয়া উহাতে বসবাস করে আসছেন। বিবাদী কাজি আরমান উক্ত জমান পয়েন্ট নামক ৯ম তলা বিশিষ্ট ভবনের ডেভলোপার ছিলো। আমি ফ্ল্যাট ক্রেতা হিসাবে বিল্ডিয়ের নিচ তলায় ১টি পার্কিং স্পেস পাওনা আছি, যা আমি দীর্ঘদিন যাবৎ বিবাদীকে অনুরোধ করিতেছি বুঝাইয়া দেওয়ার জন্য কিন্তু বিবাদী বুঝাইয়া না দিয়া দিচ্ছি দিব বলিয়া বিভিন্ন তারিখ দিয়া তাল বাহানা করিয়া আসিতেছিলো।
এ বিষয়কে কেন্দ্র করিয়া সোমবার ১৪ অক্টোবর সকাল সাড়ে ১১টায় বিবাদী অজ্ঞাত নামা ১০/১৫ জন সন্ত্রাসী প্রকৃতীর লোকজন নিয়ে জামতলা সাকিনস্থ উক্ত জামান পয়েন্ট এর নিচ তলায় আসিয়া আমাকে বাসা হইতে ডাকিয়া নিচ তলায় নিয়া যাইয়া অতর্কিতভাবে এলোপাতারি মারধর করিয়া শরীরের বিভিন্ন স্থানে নিলাফুলা জখম করে। এ সময় বিবাদী আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে ধারালো চাপাতি দিয়া আমার ঘাড়ে কোপ দিলে আমি বিবাদীর কোপ এড়ানোর চেষ্টা করিলে চাপাতির কোপ আমার ডান কানে লাগিয়া গুরুত্বর কাটা রক্তাক্ত জখম হয়। আমার ডাক চিৎকারে আমার স্ত্রী সুমাইয়া আহম্মেদ (২৯) আগাইয়া আসিলে বিবাদীগন আমার স্ত্রীকেও এলোপাতারি মারধর করে। আমাদের ডাক চিৎকার শুনিয়া আশে পাশের লোকজন আগাইয়া আসিলে বিবাদী আমাকে জানায় যে, যদি আমি এ ব্যাপারে বেশি বাড়াবাড়ি করি তাহা হইলে আমাকে মিথ্যা মামলা দিয়া হয়রানি করিবে সহ জানে মারিয়া ফেলিবে মর্মে হুমকি প্রদান করিয়া চলিয়া যায়।
ঘটনাস্থল উক্ত ভবনে গনমাধ্যম কর্মীরা গিয়ে জানতে পারেন যে, মাইনুল চৌধুরী প্রায় ৫ বছর পুর্বে অত্র বিল্ডিংয়ে পার্কিং স্পেসসহ ভবনের ৬ তলায় একটি ফ্লাট ক্রয় করেন। ফ্লাটে বসবাসের সুযোগ পেলেও পার্কিং স্পেসটি বুঝিয়ে দেননি তারা। গত প্রায় ৫ বছর সাবেক এমপির ছেলে অয়ন ওসমানের নাম ভাঙ্গিয়ে কাজি আরমানগংরা সেটাকে দখল করে একটি অফিস তৈরী করে সেই পার্কিং স্পেসটি দখল করে রাখেন। ৫ আগষ্ট শেখ হাসিনা দেশত্যাগের পর সেই অফিসটিতে হামলা চালিয়ে সেখানে রক্ষিত সকল মালামাল লুট করে নিয়ে দূর্বৃত্তরা। গত ২দিন পুর্বে সেই পার্কিং স্পেসের দেয়ালগুলো ভেঙ্গে সেখানে গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা করেন মাইনুল চৌধুরী। কিন্তু হঠাৎ ভবনটির কাজি আরমান প্রায় ৪০/৫০ জন লোকজন নিয়ে ভবনের নিচে অবস্থান করে তাকে বাসা থেকে বের করে এনেই মারধর শুরু করেন। এক পর্যায়ে তাকে উঠিয়ে নিতে মারধর করতে করতে বাসা থেকে বের করে রাস্তায় নিয়ে যায়। এ সময় তার স্ত্রী বাধা প্রদান করলে তাকেও শারীরিকভাবে হেনস্তা করে এবং কোলে থাকা শিশু সন্তানকেও মারধর করেন।
স্থানীয় কয়েকজন জানান, ৯ম তলা বিশিষ্ট জামান পয়েন্টের পুরো কাজ সম্পন্ন না করেই তিনি ফ্লাটগুলো বিক্রি করে টাকা নিয়ে চলে যান। ভবনের বিদ্যুৎ ও পানির ব্যবস্থার জন্য ফ্লাটের মালিকরা প্রায় ২৫ লক্ষ টাকা ব্যয় করে তা সম্পন্ন করেন। তারা আরও বলেন,সাংসদ পুত্র অয়ন ওসমানের সাহসেই কাজি আরমান দীর্ঘদিন যাবত মাইনুল চৌধুরীর এই পার্কিং স্পেসটি দখলে রেখেছিলেন। এখন সেটা তাকে না বুঝিয়ে দিয়ে মোটা অংকের টাকা বিনিময়ে অন্যত্র বিক্রির অপচেষ্টা করছেন। তাছাড়া বর্তমানে তিনি এ ভবনের কোন অংকের মালিক নন। ফ্লাটের মালিক মাইনুল চৌধুরীর সাথে কাজি আরমান যে অন্যায় ও অবিচার করেছেন আমরা এর ন্যায় বিচার চাই।
এ বিষয়ে জামান পয়েন্টের ডেভলপার কাজি আরমানের মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মুলত দীর্ঘদিন যাবত উক্ত স্থানটি একজনের দখলে ছিলো। সেখানকার দেয়ালটি ভেঙ্গে তিনি দখলে নিতে চেয়েছেন আমাকে না জানিয়ে । আমি বিষয়টি জানার পর সেখানে গিয়ে তাকে জিজ্ঞেস করতেই তিনি আমার কলারে চেপে গায়ে হাত তোলেন। তিনি যদি উক্ত স্পেসটি পান তাহলে একসাথে বসে কথা হবে মিচ্যুয়াল হবে কিন্তু তিনি তা করেননি। তার কাছে কি কাগজ রয়েছে তা উপস্থাপন করা হোক। প্রয়োজনে আপনারা সবকিছু যাচাই করুন কোন না সত্য আর কোনটা মিথ্যা। তাছাড়া যার কাছ থেকে ক্রয় করেছেন তিনিই সব বলতে পারবেন।