ঐতিহাসিক ৭ই নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা ও যুব সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। রোববার (১৭ নভেম্বর) বিকালে শহরের ডিআইটি এলাকায় এ সভা ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। মহানগর যুবদল নেতা মাজহারুল ইসলাম জোসেফের সভাপতিতে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে মহানগর বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান ও প্রধান বক্তা হিসেবে মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট আবু আল ইউসুফ খান টিপু উপস্থিত ছিলেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান বলেন, ঐতিহাসিক ৭ই নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে আজকের এ আলোচনা সভা থেকে আমাদের শপথ হবে, শুধু এ নারায়ণগঞ্জই না গোটা বাংলাদেশে গণতন্ত্র আমরা প্রতিষ্ঠা করবো। আমরা জনগণের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা করবো। নারায়ণগঞ্জ থেকে সকল নৈরাজ্য, সন্ত্রাস ও মাদক আমরা নির্মূল করবো। আমরা এ নারায়ণগঞ্জকে একটি শান্তির শহর হিসেবে গড়ে তোলতে চাই। আর এ নারায়ণগঞ্জকে একটি শান্তির শহর হিসেবে গড়ে তোলার জন্য যুবদলকে দায়িত্ব নিতে হবে। ওই ফ্যাসিবাদি শেখ হাসিনার দোসররা দীর্ঘ ষোলটি যেভাবে জুলুম অত্যাচার করেছে, ব্যবসায়ীদেরকে জিম্মি করে অর্থ আদায় করেছে, সেভাবে আর চলতে দেয়া যাবেনা।
যুবদলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে সাখাওয়াত আরও বলেন, আমি আজকের এ সভা থেকে যুবদলের ভাইদের কাছে অনুরোধ রেখে বলতে চাই সেই বোরকা শামীমের দোসরদের মত সন্ত্রাস, চাঁদাবাজী, নৈরাজ্যে সাথে জড়িত হতে চাই না। আমি বলতে চাই, বিএনপিসহ যুবদল-ছাত্রদলের মধ্যে কোন সন্ত্রাসী, কোন চাঁদাবাজা, জুলুমবাজ, অন্যের সম্পত্তি দখলকারিদের স্থান দেয়া হবে না। যারা এসমস্ত কাজে জড়িত হবে, তাদেরকে কানধরে বিএনপি থেকে বের করে দেয়া হবে।
প্রধান বক্তার বক্তব্যে মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট আবু আল ইউসুফ খান টিপু বলেন, আজ ঐক্যের প্রয়োজন। কার নেতৃত্বে? তারেক রহমানের নেতৃত্বে। আজ ঐক্যের প্রয়োজন। মহানগর যুবদলের আহ্বায়ক মনিরুল ইসলাম সজল আর মাজহারুল ইসলাম জোসেফের ঐক্যের প্রয়োজন। আজ ঐক্যের প্রয়োজন মহানগর যুবদলের সদস্য সচিব সাহেদ আর জোসেফের সাথে ঐক্যের প্রয়োজন। আজ যদি তারা ঐক্য থাকে তাহলে ওই গডফাদারদের দাঁতভাঙ্গা জবাব দিতে তারাই যথেষ্ঠ।
নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে টিপু বলেন, আমরা যদি জিয়াউর রহমানকে ভালোবাসে থাকি, আমরা যদি দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে ভালোবাসে থাকি আর আমরা যদি তারেক রহমানকে ভালোবাসে থাকি তাহলে তাদের নির্দেশ আমাদের অবশ্যই পালন করতে হবে। তারেক রহমান মহানগর যুবদলের যে কমিটি দিয়েছে সেই চেইন অব কমান্ড মেনে চলবেন।
তিনি জোসেফের প্রসঙ্গে বলেন, আমরা চাই মাজহারুল ইসলাম জোসেফ আগামীতে দিনে এমন গুরুত্বপূর্ণ পদে আসবে আপনারা অবাক হয়ে যাবেন। অতএব, ঘরে ভিতরে বিভেদ সৃষ্টি করবেন না। যুবদলে না, ছাত্রদলে না কোন অঙ্গসংগঠনে বিভেদ সৃষ্টি করবেন না। আমি চাই জোসেফ তার নেতাকর্মীদের নিয়ে আরও এগিয়ে যাক্। কিন্তু সেটা অবশ্যই চেইন অব কমান্ডের মাধ্যমে। জোসেফের প্রতি আমাদের মহানগর বিএনপির সহযোগীতা অবশ্যই থাকবে।
অ্যাডভোকেট টিপু আরও বলেন, বাংলাদেশের বিরুদ্ধে বার বার আধিপত্য লাভের জন্য ষড়যন্ত্র করে চলছে, ইসলামের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে চলছে, অসাপ্রদায়িক চেতনার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে। এখনও আমাদের যুদ্ধ শেষ হয় নাই। আমরা বলতে চাই আগামী দিনে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও আগামী দিনের রাষ্ট্রের কর্ণধার তারেক রহমানের নেতৃত্বে আমাদেরকে সকল অপশক্তির বিরুদ্ধে রাজপথে থাকতে হবে। আমরা অতিতেও রাজপথে ছিলাম, এখনও আছি এবং ভবিষ্যতেও থাকবো। নারায়ণগঞ্জের যারা যুবদল-ছাত্রদলের নেতৃত্বে আছেন, কোন গডফাদারের দালালি করবেন না। আওয়ামী লীগের সাথে আঁতাঁত, জাতীয় পার্টির সাথে আঁতাঁত করবেন না। বিগত দিনে যারা আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির সাথে আঁতাঁত করেছেন, গডফাদারদের সাথে আঁতাঁত করেছেন, তাদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই আজ আপনারা যে মিছিল করছেন, সেদিন আপনাদের এ মিছিল কোথায় ছিলো? সেদিন পাঁচ তলা থেকে চারতলায় নামেন নাই। কেন এ পাড় থেকে ওই পাড়ে পলায়ন করেছেন? শুধু এইটুকু বলতে চাই, আমরা ঐক্য চাই। কার সাথে ঐক্য চাই শহীদ জিয়ার সৈনিকদের সাথে ঐক্য চাই, খালেদা জিয়ার সৈনিকদের সাথে ঐক্য চাই, তারেক জিয়ার সৈনিকদের সাথে ঐক্য চাই। আমরা কোন দালালদের সাথে, কোন গডফাদারদের সাথে ঐক্য চাই না।
সভাপতির বক্তব্যে মহানগর যুবদল নেতা মাজহারুল ইসলাম জোসেফ বলেন, আমাদের যুদ্ধ এখনও শেষ হয় নাই। তাই আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ থেকে এ জুলাই-আগস্টের শহীদদের রক্তের মর্যাদা দিতে হবে। তাদের মাধ্যমে অর্জিত স্বাধীনতাকে সফল করে তোলার জন্য আমাদের সভ্য, নম্র, ভদ্র ও বিচক্ষণতার মাধ্যেমে রাজনীতি করে যেতে হবে। কারণ, এদেশে বার বার গণতন্ত্র বুলন্ঠিত হয়েছে, লুন্ঠিত হয়েছে। তাই আমাদের ধৈর্য ধারণ করে সমুন¦য়ের মাধ্যমে জনগণের জন্য কাজ করে যেতে হবে।
আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন, মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আনোয়ার হোসেন আনু, ফতেহ মোহাম্মদ রেজা রিপন, নারায়ণগঞ্জ সদর থানা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক নাজমুল হক, মহানগর মহিলা দলের সভানেত্রী দিলারা মাসুদ ময়না, মহানগর যুবদলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক জুয়েল প্রধান, বন্দর থানা যুবদলের সভাপতি আমির হোসেন প্রমূখ।