প্রথম ধাপের বন্দর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সোমবার মধ্যরাতে শেষ হয়েছে প্রচার। আগামীকাল বুধবার অনুষ্ঠিত হবে ভোট। এ উপলক্ষে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় ব্যাপক প্রস্তুত গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানাগেছে। এছাড়াও ভোটারদের কেন্দ্রমুখী করতে নেওয়া হয়েছে নানা পদক্ষেপ।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বন্দর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থীদের শেষ মুহূর্তের প্রচার উৎসবমুখর হয়ে উঠেছে। উপজেলার ৫টি ইউনিয়ন পোস্টার-ব্যানারে ছেয়ে গেছে। নির্বাচনী আমেজ বিরাজ করছে জনমনে। তাই প্রার্থীদেরও দৌড়ঝাঁপের কমতি নেই। প্রার্থীরা নানা প্রতিশ্রুতি নিয়ে শেষবারের মতো হাজির হয়েছেন ভোটারের দুয়ারে। শেষ মুহূর্তে সকাল থেকেই প্রার্থী ও তাদের কর্মীরা যাচ্ছেন ভোটারদের কাছে। চাচ্ছেন ভোট। এ ছাড়া বিগত সময়ের ভুলত্রুটি সংশোধনের জন্য ক্ষমা প্রার্থনাও করছেন তারা। নতুন করে দিচ্ছেন নানা প্রতিশ্রুতি।
নির্বাচনে তিন পদে ১০ জন প্রার্থী থাকলেও চেয়ারম্যান পদে মূলত তিন প্রার্থীকে নিয়ে চলছে সরগরম আলোচনা। চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ প্রার্থী বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান এমএ রশিদ দোয়াত কলম প্রতীক নিয়ে ভোটযুদ্ধে নেমেছে। তার অপর দুই প্রতিদ্বন্দ্বী হচ্ছেন: মুছাপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মাকসুদ হোসেন, তার প্রতীক আনারস ও বন্দর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়াম্যান আতাউর রহমান মুকুল, তিনি লড়ছেন চিংড়ি মাছ প্রতীক নিয়ে। এছাড়াও চেয়ারম্যান পদে লড়ছেন মুছাপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মাকসুদ হোসেনের পুত্র মাহমুদুল হাসান শুভও, তার প্রতীক হেলিকপ্টার।
ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন, বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান সানাউল্লাহ্ সানু (উড়োজাহাজ), মোশাঈদ রহমান (তালা), মো: আলমগীর (মাইক) ও শাহিদুল ইসলাম জুয়েল (টিউবওয়েল)। নারী ভাইস চেয়াম্যান পদে মাহমুদা আক্তার (কলস) ও বর্তমান নারী ভাইস চেয়ারম্যান সালিমা হোসেন (ফুটবল) ভোটযুদ্ধে নেমেছেন।
বন্দর উপজেলা পরিষদের ৫ টি ইউনিয়নে প্রায় ১ লক্ষ ৩১ হাজার ৫৬৪ ভোটার রয়েছে। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার ৬৭ হাজার ৫০০ জন, নারী ভোটার ৬৪ হাজার ৬২ জন, হিজলা ভোটার ২ জন।
এদিকে ভোটকে কেন্দ্র করে পাড়া-মহল্লা, অলিগলিতে চায়ের দোকানে বেড়েছে বেচা-বিক্রি। দোকানিদের মাঝেও চলছে উৎসাহ। ভোটাররাও চান তাদের পছন্দের প্রার্থীকে বেছে নিতে। নির্বাচন প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ভোটাররা বলেন, আসলে নির্বাচন নিয়ে আমাদের তেমন মাথা ব্যথা নেই। ভোট দিয়ে সাধারণ জনগণের লাভ কি? সাধারণ মানুষের চাওয়া এলাকার উন্নয়ন। দুর্নীতি ও মাদকমুক্ত সমাজ গঠন। এসব ক্ষেত্রে জনপ্রতিনিধিরা তেমন কার্যকর ভূমিকা পালন করেন না, তারা বরং আখের গোছানোর কাজে ব্যস্ত থাকেন।
ভোটাররা আরও বলেন, যে টাকা খরচ করে জনপ্রতিনিধি হয়, সেই টাকা উঠিয়ে আবার পরের নির্বাচনের জন্য টাকা গোছাতে গোছাতেই সময় শেষ। কাজ করবে কখন তারা। তারা এও বলেন, বেশিরভাগ মানুষ ব্যস্ত, গরমজনিত সমস্যা ও ঝড়বৃষ্টির কারণে বন্দর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোটার উপস্থিত কম হতে পারে।
জেলা নির্বাচন কার্যালয় সূত্রে জানাগেছে, নির্বাচনের সব ধরনের প্রস্তুতি ইতিমধ্যেই তারা সম্পন্ন করেছেন। নির্বাচন সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ করতে সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে। পর্যাপ্ত পরিমাণ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারীবাহিনী নিয়োজিত থাকবে। সব প্রার্থীকে সমান গুরুত্ব দিয়ে নির্বাচনী পরিবেশ নিরপেক্ষ রাখতে সর্বোচ্চ চেষ্টা অব্যাহত থাকবে বলেও জেলা নির্বাচন কার্যালয় সূত্রে জানাগেছে।