বর্ণাঢ্য র্যালি, আলোচনা সভা, প্রার্থণা ও বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুলেল শ্রদ্ধা নিবেদনের মধ্যদিয়ে সর্বকালের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৪তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস পালন করেছে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ ও যুব ঐক্য পরিষদ। দিবসটি উপলক্ষে রোববার (১৭ মার্চ) সকাল ১০টায় ঐক্যপরিষদের আয়োজনে শহরে বের করা হয় এক বর্ণাঢ্য র্যালি।
র্যালিটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে ২নং রেলগেটস্থ জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে ঐক্যপরিষদের নেতৃবৃন্দরা।
জাতির পিতার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সকাল ১১ টায় ২নং রেলগেটস্থ কাজী প্লাজায় ঐক্য পরিষদের কার্যালয়ে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। নারায়ণগঞ্জ মহানগর হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সহ সভাপতি বিশ্বজিৎ সাহার সভাপতিত্বে ও জেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রঞ্জিত মন্ডলের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি লিটন চন্দ্র পাল।
বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নিমাই চন্দ্র দে, নারায়ণগঞ্জ জেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ কুমার দাস ,জেলার কোষাধ্যক্ষ পিন্টু রায়।
সভায় আরও বক্তব্য রাখেন জেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি প্রদীপ কুমার দাস, মহানগরের সাংগঠনিক সম্পাদক অরুন দেবনাথ, নারায়ণগঞ্জ জেলা যুব ঐক্য পরিষদের সভাপতি আনন্দ কুমার সেরাওগী সুমন ও সাধারণ সম্পাদক ভজন চন্দ্র দাস।
এসময় বক্তারা বলেন, ১৭ই মার্চ স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শুভ জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস। এই শুভ দিনে আমরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি ও তাঁর আত্মার শান্তি কামনা করছি। বাঙালি জাতির স্বপ্নদ্রষ্টা এবং বাঙালি জাতীয়তাবাদের প্রবক্তা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯২০ সালের ১৭ মার্চ গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। শৈশব থেকেই তিনি অত্যন্ত মানবদরদী ও অধিকার আদায়ে আপোসহীন ছিলেন। স্কুলজীবন থেকেই তাঁর মধ্যে নেতৃত্বের গুণাবলি পরিলক্ষিত হয়। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন, ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ১৯৫৮ সালের সামরিক শাসনবিরোধী আন্দোলন, ১৯৬৬ সালের ৬ দফা, ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থান, ১৯৭০ সালের নির্বাচনসহ বাঙালির মুক্তি ও অধিকার আদায়ের প্রতিটি গণতান্ত্রিক ও স্বাধীকার আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন তিনি। এ জন্য তাঁকে বহুবার কারাবরণ করতে হয়েছে। তবুও বাঙালির অধিকারের প্রশ্নে তিনি কখনো শাসকগোষ্ঠীর সাথে আপোস করেননি।
আরও পড়ুন: নানা আয়োজনে ‘ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ’ দিবস পালন করলো না.গঞ্জ ঐক্য পরিষদ
১৯৭১ সালের ৭ মার্চ তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে বিশাল জনসমুদ্রের সামনে ঐতিহাসিক ভাষণ প্রদান করেন। ঐতিহাসিক ভাষণটি ছিল বাঙালি জাতির মুক্তির সনদ। ২০১৭ সালের ৩০ অক্টোবর ইউনেস্কো ৭ই মার্চের সেই ভাষণকে ঐতিহাসিক দলিল হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। ২৬ মার্চ ১৯৭১ স্বাধীনতার ঘোষণা করেন বঙ্গবন্ধু। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে দীর্ঘ নয়মাস সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে আমরা অর্জন করি স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ। দেশ স্বাধীনের পর বঙ্গবন্ধু তাঁর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার কাজ শুরু করেন। কিন্তু ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট স্বপরিবারে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুুজিবুর রহমান এবং ৩রা নভেম্বর জাতীয় চার নেতাকে হত্যার মাধ্যমে ঘাতকরা বঙ্গবন্ধুকে তাঁর সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে দেয়নি। এখন আনন্দের বিষয় হচ্ছে বঙ্গবন্ধুর কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সেই সোনার বাংলা গড়ছেন। আমরা মনে করি, প্রধানমন্ত্রী যে গতিতে উন্নয়ন অব্যাহত রেখেছেন, আগামী ২০৪১ সালে দেশ বিশ্বের অন্যতম ধনী ও স্মার্ট বাংলাদেশ পরিণত হবে। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সুখী-সমৃদ্ধ সোনার বাংলা বাস্তবায়নে আমাদের নতুন প্রজন্মকে দেশপ্রেম, সততা ও নিষ্ঠাবোধ জাগ্রত করার মাধ্যমে তাদের প্রকৃত মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। তাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস এবং বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চারনেতা সর্ম্পকে জানাতে হবে। বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনে আমরা সকলকে কাঙ্খিত উন্নত-সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার কাজে অংশগ্রহণের আহ্বান জানাচ্ছি।
আলোচনা শেষে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার শহীদ পরিবারের আত্মার শান্তি কামনায় এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দীর্ঘায়ু কামনা করে বিশেষ প্রার্থণা অনুষ্ঠিত হয়।
আরও পড়ুন: অসচ্ছল ও মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের মাঝে না.গঞ্জ ঐক্য পরিষদের নগদ অর্থ বিতরণ
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, বন্দর উপজেলা ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সুজন চন্দ্র দাস, জেলার নেতা গোবিন্দ চন্দ্র দাস,মহানগরের সাংগঠনিক সম্পাদক বিপ্লব কুন্ডু, তপন ঘোষ, মহিলা ঐক্য পরিষদের নেত্রী রত্না কর্মকার, দীপা দাস, সহ সাধারণ সম্পাদক প্রশান্ত কুমার সাহা, অজয় সুত্রধর, যুব বিষয়ক সম্পাদক সুব্রত কুমার সাহা, ১৪ নং ওয়ার্ড ঐক্য পরিষদের সভাপতি পংকজ রায়, সাধারণ সম্পাদক রঞ্জিত দাস, মহানগরের নেতা জয়ন্ত সাহা পিংকু, গৌতম দত্ত, গোবিন্দ সাহা, খোকন বিশ্বাস, কৃষ্ণপদ মজুমদার, সত্যরঞ্জন দেবনাথ, ১০ নং ওয়ার্ড ঐক্য পরিষদের সভাপতি নিমাই চন্দ্র চন্দ, সাধারণ সম্পাদক ইন্দ্রজিৎ রায়,১১ নং ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক খোকন বিশ্বাস, বিপুল পোদ্দার,নশংকর দে, মহানগর যুব ঐক্য পরিষদের সভাপতি এড. অঞ্জন দাস, সাধারণ সম্পাদক রিপন কর্মকার, সাংগঠনিক সম্পাদক মিঠুন দত্ত বিল্লু, প্রণয় সিংহ, জ্যাকি নন্দী, সজিব ঘোষ, সজল বাবু, বন্দর যুব ঐক্য পরিষদের সভাপতি তুলশী ঘোষ, সাধারণ সম্পাদক জিতু দাস, মিলন বিশ্বাস হৃদয়, ভবন বর্মন, হিরন চন্দ্র দাস, মিঠু চক্রবর্তী, কিশোর দাস, রবি দাস, সুকুমার সুত্রধর ও অজিত ঘোষ সহ আরও অনেক নেতৃবৃন্দ ।