নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের আওতাধীন গলাচিপা এলাকায় বাড়ি ঘরে হামলা, ভাংচুর, টাকা ও স্বর্ণালংকার লুটপাটের অভিযোগ সংবাদ সম্মেলন করেছেন এক নারী। সংবাদ সম্মেলনের দুই ভাসুর চঞ্চল ও রুবেলসহ তাদের আইনজীবী, নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি হাসান ফেরদৌস জুয়েল এ ঘটনায় জড়িত বলে দাবি করেন ভুক্তভোগী জোছনা বেগম।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ঐ নারী বলেন, ২০০৯ সালে পছন্দনীয় বিয়ে করার ঘটনাকে কেন্দ্র করে আমার স্বামী রোমেনের সাথে তার গোটা পরিবারের অন্তর্দন্দ্ব শুরু হয়। আমরা বিয়ে করে দীর্ঘ দিন অন্যত্র ভাড়ায় থাকি। এর মধ্যে আমার শ^শুড়-শ^াশুড়ী মারা গেলে ২০১৯ সালে আমরা এই বাড়িতে উঠি কিন্তু তখন বিপত্তি বাধে আমার ভাসুর, ননাস ও দেবর। তারা আমাদেরকে বাড়ি থেকে উৎখাতের নানা ষড়যন্ত্র করতে থাকে। একসময় আমার বড় ভাসুর চঞ্চল মাহবুব এবং রুবেলের নেতৃত্বে গভীর মারধর, অত্যাচার ও অমানবিক আচরন করতে থাকেন। এরপর তারা গোপনে বাড়ি বিক্রয়ের সিদ্ধান্ত নেয় এবং আমরা এ ষড়যন্ত্র জানতে পেরে বিজ্ঞ আদালতে একটি দেওয়ানী মোকদ্দমা দায়ের করি যার মামলা নং- ১১২/২০। মামলাটিতে আমরা প্রাথমিক ডিগ্রি পাই কিন্তু বিজ্ঞ কমিশনার আসাদুজ্জামানা লিটন আমাকে যে ভাবে ভাগ করে দেন সে ভাবে থাকার উপযোগী নয় বলে আমি উচ্চ আদালতে রিভিশন মামলা করি এবং সে খানেও আমরা আমাদের পক্ষে রায় পাই যেন আমাদেরকে লপ্ত দখল বুঝিয়ে দিয়ে ভাগ করা হয়। কিন্তু আসাদুজ্জামান লিটন ও বিবাদী পক্ষের এ্যাডভোকেট হাসান ফেরদৌস জুয়েলের সঙ্গ নিয়ে আবারো আমাকে ৬ফিট পাশ ৬৬ফিট লম্বা-লম্বি ভাবে ভাগ করে দেয়। পরবর্তীতে গত ২৭ আগষ্ট কমিশনার রিপোর্ট দাখিল করেন যা আমি জানিনা। আমি গত ০৭ সেপ্টেম্বর আপত্তি দাখিল করলে ০৮ অক্টোবর চুড়ান্ত ডিগ্রির দিন ধার্য হয় এবং এটার বিরুদ্ধে ৩১ অক্টোবর আবারো উচ্চ আদালতে আপিল করি। আপিল মামলা নং-৩২৮/২০২৩ইং। আপিল মামলায় গত ০৫ নভেম্বর, ০৮ নভেম্বর ও ২৩ নভেম্বর তিনটি তারিখ যায়। ২৬ নভেম্বর অর্ধেক শুনানী হয় এবং বাকী অর্ধেক শুনানীর জন্য ০৯/০১/২০২৪ইং তারিখ নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু বিগত ২৯ নভেম্বর নিজেকে ম্যাজিস্ট্রেট পরিচয় দেয়া এক ব্যক্তির নেতৃত্বে কিছু লোক এসে বিনা নোটিশে আমার বাড়ি ভাংচুর করে। এসময় আমি আমার আইনজীবীর সাথে দেখা করে এই বিষয়ে জানালে তিনি বলেন, বে আইনী ভাবে ভাংচুর করছে। উকিলের চেম্বার থেকে এসে জানতে পারি যে আমাকে মেজিষ্ট্রেট পরিচয় দিয়েছে আসলে সে মেজিস্ট্রেট নয় সে হচ্ছে একজন নাজির। তখন দেখি, আমার সাড়ে আট ভরি স্বর্ণালংকার এবং প্রায় আড়াই লক্ষ টাকা নেই এবং আরো অনেক মূল্যবান জিনিসপত্র নেই। এছাড়া, বাড়ির মিটার ও পানির মটর সহ খুলে নিয়ে গেছে। রাতে যখন আমরা মালামাল সরাবো, সেখানে এ্যাডভোকেট হাসান ফেরদৌস জুয়েল কিছু সন্ত্রাসী লোকজন নিয়ে এসে গেইটে তালা দিয়ে দেয়। আর বলে আমি বাড়ি কিনে নিয়েছি কিন্তু কোন প্রমান চাইলে তিনি দেখাতে পারেন নি এবং বলে তোমাদের দেখাবো কেন?
তিনি আরও বলেন, এই সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এবং মানবতার মা অসহায় আস্থা বঞ্চিত জনতার ভরসাস্থল মমতাময়ী মা শেখ হাসিনা, নারায়ণগঞ্জের গণমানুষের নেতা নারায়ণগঞ্জের ৪-আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য এ কে এম শামীম ওসমান এবং ৫-আসনের মাননীয় এম পি, দানবীর এ.কে.এম. সেলিম ওসমানের দৃষ্টি আকর্ষন করছি।
তিনি আরও বলেন, আইনের লোকের দ্বারা মানুষ সাহায্যে পাবে, তারা অসহায় মানুষের পাশে দাড়াবে, তারা রক্ষক হিসেবে মানুষের পাশে দাড়াবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তুরক্ষক যদি বক্ষক হয় তাহলে দেশ কিভাবে চলবে ? দেশে অন্যায়, অবিচার, এদের কারণে বৃদ্ধি পাচ্ছে। দেশ থেকে দেশের আইনের থেকে এদেশের মানুষের বিশ্বাস এইসব বেশধারী রক্ষকদের কারনে উঠে যাচ্ছে। বদনাম হচ্ছে দেশের, বদনাম হচ্ছে শেখ হাসিনার। তাই আমি তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন সহ আমার পরিবারের নিরাপত্তা ও পূর্বের ন্যয় যেন বাড়িতে বসবাস করিতে পারি এ বিষয়ে সরকারের এবং উপরস্থ কর্মকর্তাদের আইনত যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন করছি।