গুঁড়িয়ে দেয়া হয়েছে নারায়ণগঞ্জের চাষাঢ়াস্থ বহু আলোচিত বায়তুল আমান ভবন। এটি নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাবেক সাংসদ শামীম ওসমানের দাদার বাড়ি হিসেবেও পরিচিত। বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা সাড়ে ছয় টায় একটি বুলডোজার বায়তুল আমান ভবনের পূর্বপাশে গিয়ে অবস্থান নেয়। পরে রাত সাতটায় প্রথমে কয়েকজন যুবক ভবনের ভেতরে গিয়ে বারান্দায় উঠে ঘুরাঘুরি করতে থাকে। পরে বুলডোজার দিয়ে প্রথমে ভবনের পূর্বপাশ দিয়ে ভাঙ্গতে শুরু করে। মুল ফটক ভেঙ্গে বুলডোজার ভিতরে ঢুকে ভবন ভাংচুর করে। এসময় আগে থেকেই দ্বিতলার বারান্ডায় থাকা যুবকরা আগুন ধরিয়ে দেয়। এ সময় আওয়ামীলীগ, শেখ হাসিনা ও শামীম ওসমানের বিরুদ্ধে নানা শ্লোগান দেন তারা। ভবনের চারিপাশে ও আশপাশের ভবন গুলোতে শত শত উৎসুক লোকজন ভাংচুর আগুনের দৃশ্য প্রত্যক্ষ করে।
এদিকে বাড়িটির ভাঙ্গার আগে মহানগর বিএনপির আহবায়ক এডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন ও সদস্য সচিব আবু আল ইউসুফ খান টিপুর নেতৃত্বে বিপুল সংখ্যক বিএনপির নেতাকর্মী মিছিল নিয়ে বাড়িটির দিকে যায়। মিছিলে যোগ দেয় সাধারণ জনতা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে `বায়তুল আমান` বাড়িটি অবৈধ দখলে ছিল এবং জনসাধারণের চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি করছিল। এছাড়া, রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে জায়গাটি দখলে রাখা হয়েছিল বলে অভিযোগ রয়েছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর থেকে শত শত মানুষ চাষাড়া এলাকায় জড়ো হতে শুরু করে। তারা `দখলদারদের বাড়ি গুঁড়িয়ে দাও` স্লোগান দিতে দিতে বাড়িটির সামনে অবস্থান নেয়। এরপর, প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলে তারা ভেকু নিয়ে এসে বাড়িটি ভাঙতে শুরু করে।
ঘটনার পরপরই পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। তবে তারা সরাসরি কোনো হস্তক্ষেপ না করে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে। নারায়ণগঞ্জ সদর থানার ওসি জানান, “আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করছি। কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
বাড়িটির মালিক শামীম ওসমানের দাদা খান সাহেব ওসমান আলী। এই বাড়িতে আওয়ামীলীগের জন্ম হয়েছে বলে ওসমান পরিবার দাবী করে আসছিল। এরআগে ২০০১ সালে বাড়িটি ভাঙ্গার উদ্যোগ নিয়েছিল সড়ক ও জনপথ বিভাগ। তখন ওসমান পরিবারের পুত্রবধূ চিত্র নায়িকা সারাহ বেগম কবরী বাধা হয়ে দাঁড়ান। বাড়িটিতে শামীম ওসমানের সৎ চাচা ননী ও মনি সারোয়ার বসবাস করতেন।