নারায়ণগঞ্জের পরিবহন সেক্টরগুলোতে ওসমানদের মতই মাফিয়া রূপে আর্বিভাব হচ্ছেন মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক সাখাওয়াত ইসলাম রানা। এসব সেক্টরগুলোকে দখলে নিতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন তিনি। এসব কর্মকান্ডে বার বার বির্তকীত হলেও তাকে দমিয়ে রাখা যাচ্ছেনা। যতই দিন যাচ্ছে, ততই রাজনৈতিক পরিচয়ে বেপরোয়া হয়ে উঠছেন স্বেচ্ছাসেবক দলের এ নেতা।
গত ৫ আগস্ট থেকে এই পর্যন্ত রানার বিরুদ্ধে ডজন ডজন অভিযোগ উঠেছে। এদের মধ্যে থানাও বেশ কয়েকটি অভিযোগ জমা পড়েছে। কিন্তু থানা পুলিশকেও কোন এক রহস্যজনক কারণে তার বিরুদ্ধে অ্যাকশনে যেতে দেখা যাচ্ছেনা। তাই নানা অপকর্ম করেও বহাল থাকছেন তিনি।
তবে এবার বহাল থাকা রানা বাহিনীর অপকর্ম নিয়ে প্রকাশ্যে মুখ খোলেছেন সিফাত বাস কাউন্টার মালিক তামান্না দেওয়ান দোলা। রানা বাহিনীর বিরুদ্ধে চাঁদা দাবি ও হামলার অভিযোগ এনে সংবাদ সম্মেলন করেছেন তিনি।
ওই সংবাদ সম্মেলন থেকে নারায়ণগঞ্জ-জামালপুর রুটে চলাচল করা সিফাত বাস কাউন্টার মালিকের কাছে চাঁদা দাবি ও হামলা চালিয়ে কাউন্টার মালিককে মারধর করার মতও অভিযোগ উঠে রানা বাহিনীর বিরুদ্ধে।
শনিবার (১৯ অক্টোবর) দুপুরে রানার বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ এনে সংবাদ সম্মেলন করেছেন সিফাত বাস কাউন্টারের মালিক তামান্না দেওয়ান দোলা ও আসমা খাতুন শিরিনসহ আরও অনেক ভুক্তভোগী। শহরের চাষাঢ়াস্থ আল জয়নাল ট্রেড সেন্টার সংলগ্ন নারায়ণগঞ্জ রিপোর্টার্স ইউনিটির অস্থায়ী কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সংবাদ সম্মেলনে দোলা জানান, ৫ আগস্টের পর থেকে রানা বাহিনী শহরের উত্তর চাষাঢ়াস্থ (চাঁনমারী) এলাকায় সিফাত বাস কাউন্টার দখলে নেয়ার জন্য মরিয়া হয়ে উঠে। তারা আমাকে (বাস কাউন্টার মালিক) বিভিন্নভাবে হুমকি ধমকি প্রদান করে। রানা নিজেও আমাকে কয়েকবার কল দিয়ে বলে, টিকিটের ৫০ ভাগ লভাংশ তাকে দিতে হবে বলে জানান। নয়তো, নারায়ণগঞ্জে সিফাত বাস কাউন্টার থাকবেনা তিনি সাফ জানিয়ে দেন। একইভাবে আমাদের পরিবহন মালিককেও হুমকি দেয়া হয়। এ বিষয়ে আমি ফতুল্লা থানায় একাধীক অভিযোগও দায়ের করি। কিন্তু পুলিশের তৎপরতা না থাকার সুযোগে রানার অপতৎপরতা চলতেই থাকে।
তিনি বলেন, চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে গত ৯ অক্টোবর দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে রানার পরিচয়ে সন্ত্রাসী মাহমুদ, সজল, ভাঙ্গারী কাশেম ও বাচ্চুসহ প্রায় ১০ থেকে ১২ জন সন্ত্রাসী আমার বাস কাউন্টার জোরপূর্বক দখলে নিতে আসে। আমি ও আমার সহকর্মী আসমা খাতুন শিরিন তাদেরকে বাধা দিতে চাইলে তারা অকথ্য ভাষায় আমাদেরকে গালিগলাজ করে। আমরা নারী হওয়া সত্বেও তারা আমাদেরকে নূন্যতম সম্মানটুকু করেন নাই। উল্টো তারা হত্যার উদ্দেশ্যে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে আমাদের ওপর হামলা চালায়। এতে আমিসহ আরও কয়েকজন গুরুত্বর আহত হয়।
দোলা অভিযোগ করে বলেন, এ ঘটনায় ফতুল্লা মডেল থানায় রানার বিরুদ্ধে মামলা করতে গেলে মামলা নেবে বলে জানায় থানার ওসি। পরে জেলা পুলিশ সুপারের সহযোগীতায় আমি নিজে বাদী হয়ে ফতুল্লা থানায় অভিযোগ একটি দায়ের করি। কিন্তু সেই অভিযোগ থেকেও বাদ দিতে হয় মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক সাখাওয়াত ইসলাম রানার নাম। এটা সত্যিই দুর্ভাগ্যজনক।
এছাড়াও তিনি জানান, থানায় অভিযোগ করার পর থেকে আসামীরা তাকে বিভিন্ন মাধ্যমে হুমকি ধামকি প্রদান করছে। এসব কারণে বর্তমান নিরাপত্তাহীনতায় আছেন বলেও জানান তিনি। তাই দ্রুত আসামীদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জন্য জেলা পুলিশ সুপারের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তিনি।