নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে শিল্পগোষ্ঠী সজীব গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান হাসেম ফুডস লিমিটেড কারখানার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আবুল হাসেম ও উপমহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) মামুনুর রশীদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন নারায়ণগঞ্জ শ্রম আদালত।
মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) দুপুরে আদালতের বিচারক কিরণ শঙ্কর হালদার এই পরোয়ানা জারি করেন বলে নিশ্চিত করেছেন আদালত পুলিশের পরিদর্শক মো. আসাদুজ্জামান।
২০২১ সালের ৩০ জুন কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখার পরিদর্শক নেসার উদ্দিন আহমেদ কারখানাটিতে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা না থাকা, অনুমোদিত নকশার সাথে কারখানার মেশিন লে-আউট প্ল্যানের অসামঞ্জস্য, অনিরাপদ বৈদ্যুতিক ব্যবস্থা ও শিশু শ্রমিক নিয়োগসহ কয়েকটি অনিয়মের অভিযোগ এনে ঢাকা শ্রম আদালতে মামলাটি দায়ের করেন।
মামলার বাদী নেসার উদ্দিন বলেন, ‘কারখানাটিতে নিয়মিত পরিদর্শনে বেশকিছু অনিয়ম পাওয়া যায়। এগুলো সংশোধনের জন্য তাদের নোটিশও দেওয়া হয়। পরে মামলা করা হলে ওই মামলায় আগাম জামিনে ছিলেন অভিযুক্ত ব্যক্তিরা। সম্প্রতি মামলাটি নারায়ণগঞ্জ শ্রম আদালতে স্থানান্তরিত হয়েছে। আইন অনুযায়ী আদালত পরিবর্তন হলে আসামিদের পুনরায় জামিন নিতে হয়। আদালত আজ এক শুনানিতে দুই অভিযুক্তের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোনায়া জারি করেছেন।’
একইসাথে আগামী ২৮ এপ্রিল এই মামলায় সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য আদালত বাদীকে উপস্থিত থাকার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন বলেও জানান তিনি।
কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের এই মামলার এক সপ্তাহ পর ৮ জুলাই নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জ উপজেলায় অবস্থিত হাসেম ফুডস লিমিটেড কারখানাটিতে ভয়াবহ অগ্নিকা-ের ঘটনা ঘটে। এতে নারী ও শিশুসহ ৫৪ জন শ্রমিক-কর্মচারীর মৃত্যু হয়।
অগ্নিকান্ডে হতাহতের ঘটনায় ওই সময় পুলিশ বাদী হয়ে ৮ জনের বিরুদ্ধে অবহেলাজনিত মৃত্যুর অভিযোগে রূপগঞ্জ থানায় ২০২১ সালের ১০ জুলাই একটি হত্যা মামলা করা হয়। ওই মামলায় কারখানা মালিক এম এ হাসেম (৭০), তার ছেলে হাসীব বিন হাসেম ওরফে সজীব (৩৯), তারেক ইব্রাহীম (৩৫), তাওসীব ইব্রাহীম (৩৩), তানজীম ইব্রাহীম (২১) শাহান শান আজাদ (৪৩), কারখানার উপ মহাব্যবস্থাপক মামুনুর রশিদ (৫৩) ও সালাউদ্দিনকে (৩০) গ্রেফতার করা হয়েছিল। মামলাটি বর্তমানে আদালতে বিচারাধীন।
যদিও, গত বছরের ৪ সেপ্টেম্বর তদন্তশেষে আবুল হাসেম ও তার চার ছেলেকে বাদ দিয়ে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় সিআইডি। এই অভিযোগপত্রের বিরুদ্ধে ভুক্তভোগী তিনটি পরিবার আদালতে নারাজি দিলেও গত ২০ নভেম্বর এক শুনানিতে নারাজি আবেদন নামঞ্জুর করে দেন আদালত।