নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে শিশু তামিম ইকবাল (৯) হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় হত্যা মামলার প্রধান আসামি মেহেদী হাসান মুন্নাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বলাৎকারের ঘটনা ধামচাপা দিতেই শিশু তামিম ইকবালকে গলা চেপে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে মৃতদেহ গুম করার উদ্দেশ্যে ঘটনাস্থল কক্ষে ফেলে রাখে গ্রেপ্তারকৃত মেহেদী হাসান মুন্না।
সোমবার (১ জুলাই) জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও অপারেশন) চাইলাউ মারমা।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ২৯ জুন দুপুর ২ টায় বাদী তৈয়ব আলীর ছোট ছেলে তামিম ইকবাল খেলাধুলার জন্য বাড়ি থেকে পার্শ্ববর্তী সীমতলা মাঠের উদ্দেশ্যে রওনা হয়। বিকাল অতিবাহিত হয়ে সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসার পরেও বাদীর ছেলে বাড়িতে না ফেরায় বাদী ও তার পরিবারের সদস্যরা নিখোঁজ তামিম ইকবালকে সীমতলা মাঠসহ সম্ভাব্য বিভিন্নস্থানে খোঁজাখুজি করেও পাননি।
৩০ জুন ভোরে রূপগঞ্জ থানাধীন গোলাকান্দাইল মোড় সংলগ্ন এসআরবি ইট ভাটার পশ্চিম পার্শ্বে অবস্থিত পরিত্যক্ত দোতলা ভবনের ২য় তলায় সিঁড়ির দিক হতে চার নম্বর কক্ষে বাদীর ছেলে তামিম ইকবালের বিবস্ত্র মৃতদেহ দেখতে পায় স্থানীয়রা। পরবর্তীতে জরুরী হেল্পলাইন ৯৯৯ নম্বরে যোগাযোগ করে ঘটনার বিষয়টি অবগত করার পর রূপগঞ্জ থানাধীন ভুলতা ফাঁড়ির পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে বাদীর ছেলের মৃতদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুত করে ময়না তদন্তের জন্য মৃতদেহ নারায়ণগঞ্জ ভিক্টোরিয়া জেনারেল হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেন।
তামিম ইকবাল নিখোঁজ থাকাকালীন সময়ে হত্যাকারী মেহেদী হাসান মুন্না বাদীর পরিবারের লোকজনদের সাথে একত্রিত হয়ে ঘটনার দিন রাত পর্যন্ত তামিম ইকবালকে বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুজি করে। প্রযুক্তির সহায়তা এবং ঘটনাস্থলের আশপাশের বিভিন্ন সিসি ক্যামরার ফুটেজ পর্যবেক্ষন করে ঘটনার মূল রহস্য উন্মোচিত করে ঘটনার সাথে জড়িত কিশোর অপরাধী মেহেদী হাসান মুন্নাকে মামলার রুজুর পরবর্তী ৬ ঘন্টার মধ্যে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জড়িত কিশোর অপরাধী মেহেদী হাসান মুন্না জানায় যে, মোবাইল ফোনে পর্ণগ্রাফী ভিডিও দেখে সে বিকৃত যৌনাচারে আসক্ত হয়ে পড়ে। কিশোর অপরাধী তার বিকৃত যৌনকামনা চরিতার্থ করার উদ্দেশ্যে তামিম ইকবালকে ফুটবল খেলার প্রলোভন দেখিয়ে রূপগঞ্জ থানাধীন গোলাকান্দাইল মোড় সংলগ্ন এসআরবি ইট ভাটার পশ্চিম পার্শ্বে অবস্থিত পরিত্যক্ত দোতলা ভবনের ২য় তলায় সিঁড়ির দিক হইতে ৪নং কক্ষের ভিতর নিয়ে যায়।
অতঃপর উক্ত কিশোর অপরাধী তামিম ইকবালকে বিবস্ত্র করে জোর পূর্বক পায়ুপথে বলাৎকার করে। উক্ত ঘটনার পর তামিম ইকবাল ঘটনার বিষয়ে তার বাবা-মাকে বলে দিবে মর্মে জানালে, কিশোর অপরাধী মেহেদী হাসান মুন্না তাৎক্ষনিক পরিকল্পনা করে তামিম ইকবালকে গলা চেপে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে মৃতদেহ গুম করার উদ্দেশ্যে ঘটনাস্থল কক্ষে ফেলে রাখে।