নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জাতীয় পার্টির প্রার্থী একেএম সেলিম ওসমান বলেছেন, আমরা আওয়ামী লীগ চিনি না, জাতীয় পার্টি চিনি না, বিএনপি চিনি না। আমরা কলাগাছিয়ার মানুষ, কলাগাছিয়ার উন্নয়ন চাই। আমরা বঙ্গবন্ধুর আদর্শ সৈনিক। তবুও রাজাকার-আল বদরের মতো কিছু লোক এখনও আছেন যারা আজকেও ট্রেনে আগুন দিয়ে ৪ জনকে হত্যা করেছে। এই বৃদ্ধ বয়সে আমার নির্বাচন করার কথা ছিল না। আমি করতেও চাই নি। আমার শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে এলাকার সবাই জানেন। আমার শেষ অপারেশনে ডাক্তার আশা করেনি আমি জীবিত হয়ে ফিরব। কিন্তু মসজিদে মসজিদে আমার জন্য দোয়া হয়েছে, সবাই আমার জন্যে দোয়া করেছেন। আল্লাহর রহমতে এখনও বেঁচে আছি। লক্ষ লক্ষ মানুষ আমার জন্য দোয়া করেছেন। এত মানুষের ভালোবাসায় আমি মৃত্যুর পথ থেকে ফিরে এসেছি। তাই আমি জনগণের জন্য কাজ করতে চাই। নির্বাচনে আবার দাঁড়িয়েছি।
মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) বিকাল ৩ টায় কলাগাছিয়ার ঘারমোড়া ঈদগাহ মাঠে এক নির্বাচনী মত বিনিময় সভায় এসব কথা বলেন তিনি। সভার সভাপতিত্ব করেন কলাগাছিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়্যারম্যান হাজী মাইন উদ্দিন আহমেদ। সভায় উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এড. আবু হাসনাত মো. শহীদ বাদল, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক খোকন সাহা, জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি সানাউল্লাহ সানু, বন্দর উপজেলা আওয়মী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাজীম উদ্দিন প্রধান, কলাগাছিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. দেলোয়ার হোসেন প্রধানসহ আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির নেতৃবৃন্দ।
সভায় এলাকাবাসীর উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, কলাগাছিয়ায় মাত্র ২০ ভাগ কাজ হয়েছে, ৮০ ভাগ এখনও বাকি। কলাগাছিয়ায় এখনও একটি কলেজ নাই, যা এই এলাকাবাসীর জন্য খুবই দরকার। প্রত্যেকটি ইউনিয়নে হাই স্কুল আছে। কিন্তু একটি কলেজ থাকা উচিত বলে আমি মনে করি। আমাদের সন্তানদের সুশিক্ষিত করতে হবে। যাতে প্রত্যেক মানুষদের তারা সহযোগীতা করতে পারে। গোটা বিশ্বের কাছে আমরা করোনা মহামারির কারণে পিছিয়ে গেছি। ২ বছর কোন কাজ করতে পারি নাই। সে সময় আমরা শুধুই চেষ্টা করেছি, কোন মানুষ যাতে না খেয়ে মারা না যায়। চেয়ারম্যান, মেম্বাররা, জন প্রতিনিধিরা সবাই বেরিয়ে গেছি ঘর থেকে যাতে করোনাকালে জনগণের কষ্ট যাতে লাঘব করা যায়। তারপর আসলো ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ, আর এখন ফিলিস্তিনে যুদ্ধ। বাচ্চাদেরকেও ছাড়া হচ্ছে না। তাই আমাদের শক্তিশালী হতে হবে। আর শক্তিশালী হওয়ার একটা উপায় আসন্ন নির্বাচন। এই নির্বাচন সেলিম ওসমানের নির্বাচন না। যারা দেশকে ভালবাসেন, দেশের মানুষকে ভালোবাসেন তাদের জন্য এই নির্বাচন। একটাই কাজ করতে হবে, বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে জয়যুক্ত করে ফের ক্ষমতায় এনে জনগণের সেবা করতে সহযোগীতা করতে হবে। এ কাজ হলে বাকি ৮০ ভাগ কাজ সম্ভব হবে। আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম সুশিক্ষিত হতে পারবে, ভালো একটি পরিবেশে পড়াশুনা করতে পারবে। তাই ৭ তারিখ সকাল সকাল আপনারা পরিবার নিয়ে ভোট দিতে যাবেন। ব্যালট দেখেই বুঝতে পারবো কয় জন আমাকে ভালোবাসেন, কয় জন আমার উপর রাগ করে আছেন।
এসময় এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে স্কুল তৈরীর আবদার জানানো হয়। তার উত্তরে সেলিম ওসমান বলেন, আমি কলেজ বানানো কথা চিন্তা করেছি। আপনারা স্কুলের কথা বললেন। ইনশাল্লাহ স্কুল ও কলেজের কাজ একসাথেই হবে। সুশিক্ষিত সমাজ হোক, বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলাদেশ হোক। আমি সাড়ে নয় বছর আপনাদের গোলামী করেছি। আগামী ৫ বছর যাতে গোলামী করতে পারি এবং আপনাদের সেবা করতে পারি তার জন্য সবাই দোয়া করবেন। আমার কাজ করতে গিয়ে কোন ভুল-ত্রুটি হয়ে থাকলে আমায় ক্ষমা করবেন।
তিনি বলেন, আমি যে মঞ্চে উঠেছি, সেই মঞ্চে আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি সবাই মিলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করেছি। আমি বিএনপির ভাইদের বলবো, আপনারা লজ্জা পেয়েন না। কোথায় কি হয়েছে তা ভুলে যান, আসুন এক সাথে উন্নয়নের কাজ করি। পুলিশের প্রতি আমার অনুরোধ, ৭ তারিখ পর্যন্ত বিএনএনপির কেউ নারায়ণগঞ্জে কোন অঘটন ঘটাবে বলে বিশ্বাস করি না। তাদের বাড়িতে আসতে দিন, নির্বাচনে অংশ নেক। আমাদের নারায়ণগঞ্জের মানুষরা বিএনপিকে অবিশ্বাস করে তৃণমূল বিএনপি বানিয়েছে। তাই চলুন একসাথে মিলে কাজ করি।