শহরের কেন্দ্রীয় লঞ্চ টার্মিনাল সংলগ্ন বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে বিআইডব্লিউটিএর নির্মাণাধীন মাল্টিপারপাস জেটি নির্মাণ প্রকল্প পরিদর্শনে আসেন নৌপরিবহন এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন। এসময় প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী মাছ ব্যবসায়ীদের দ্রুত সেড নির্মাণের দাবি জানান ৩নং মাছঘাট মৎস্য আড়ৎদার ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির নেতৃবৃন্দরা। এ দাবির প্রেক্ষিতে দ্রুত সেড নির্মাণের আশ্বাস দেন তিনি। এম সাখাওয়াত হোসেনের এমন আশ্বাসে খুশি হয়েছেন পাইকারি মাছ ব্যবসায়ীরা।
মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) দুপুরে নগরীর ৩নং মাছঘাট এলাকায় এ দাবি জানান তারা।
এ সময় ৩নং মাছঘাট মৎস আড়ৎদার ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সভাপতি ফয়সাল আহমেদনৌপরিবহন এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেনের কাছে তাদের দাবি দাওয়া তুলে ধরে বলেন, আপনারা জানেন এই ঘাটে বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে একটি সেড তৈরী করে দেয়ার কথা। কিন্তুু এখনো আমাদের কোন পূর্নবাস না করে তারা আজও আমাদেরকে জানাতে পারনি কবে নাগাত আমাদের কাজটা হবে। আমাদের পুরানো দাবি গুলো আমরা আজকে মাননীয় উপদেষ্টার নিকট জানালাম। নারায়ণগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী এতো বড় একটা মৎস্য ঘাট এখানে কয়েক হাজার লোক কর্মসংস্থানের মধ্য দিয়ে জীবিকা নির্বাহ করে থাকে। অন্তত তাদের কথা চিন্তা করে আমাদের পূর্নবাসন করা জরুরী বলে মনে করি। মাননীয় উপদেষ্টার নিকট আমাদের দাবিগুলো তুলে ধরায় তিনি আমাদের সেড তৈরীর বিষয়ে সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন।
আমাদের দাবি সমুহ গুলো হলো- আমাদের আড়ৎদারদের বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে সেড নির্মাণ করে দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু এখনও বাস্তবায়নের কোন দৃশ্যমান কাজ বা অগ্রগতি দেখা যায়নি। তাই সকল কর্মকর্তাদের দৃষ্টি আকর্ষন করিতেছি যে, দ্রুত আমাদের সেডটি তৈরী করে দেওয়ার জন্য বিনয়ের সহিত অনুরোধ করিতেছি।
আমাদের এই মাছ ঘাটের আড়ৎটি দুইশত বছরের পুরনো ঐতিহ্যবাহী। নারায়ণগঞ্জ জেলার সবচাইতে বড় একটিই মাছের আড়ৎ। এই আড়তে বিশ হাজার লোক কর্মরত আছে এবং এর সাথে প্রায় আরও ত্রিশ হাজার লোকের কর্মসংস্থান সাথে জড়িত আছে। এই আড়তে প্রতিদিন প্রায় তিন থেকে চার কোটি টাকার মাছ বিক্রয় হয় এবং এই আড়তে সারা বাংলাদেশ থেকে বিক্রির জন্য মাছ আসে, এমনকি ইন্ডিয়া ও মায়ানমার থেকেও বিক্রির জন্য মাছ আসে। এই আড়ৎ থেকে নারায়ণগঞ্জবাসী ও আশে পাশের জেলার সকল মানুষের আমিষের চাহিদা পূরন করা হয়। বিআইডব্লিউটিএ এই মাছ ঘাট ইজারা দিয়ে প্রতি বছর ভ্যাট, ট্যাক্স সহ বিশাল অংকের টাকা সরকারি কোষাগারে জমা হয়ে থাকে। এই আড়ৎটি কোন কারনে বিলীন হয়ে গেলে পঞ্চাশ হাজার লোকের কর্মসংস্থান নষ্ট হবে ও নারায়ণগঞ্জবাসী মাছ থেকে আমিষের চাহিদা পূরণ হবে না। ইতিপূর্বে বিশ্ব ব্যাংকের কাজটি শুরু করার সময় তাহারা আমাদের আসস্থ করে প্রকল্পের কাজের সাথে সাথে সেডটি নির্মান করে দিবে। কিন্তু সেডের কোন কাজ শুরুই করে নাই । এত বড় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান হওয়া স্বত্বেও অতি দুঃখের সহিত জানাইতেছি যে, অদ্য রোজ পর্যন্ত আমাদের ব্যবসায়ীদের রোদে শুকাতে হয় ও বৃষ্টিতে ভিজতে হয়।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, ৩নং মাছঘাট মৎস আড়ৎদার ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সভাপতি ফয়সাল আহাম্মেদ, সহ-সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম, সাধারন সম্পাদক মো: হোসেন সনি, সহ- সাধারন সম্পাদক হাবিবুর রহমান, ৩নং মাছঘাট মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান সুমন, ইদ্রিসুর রহমান ইদ্রিস, ৩নং মাছ ঘাট পাইকারি সমিতির সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন প্রমুথ।