বৃহস্পতিবার, ০৯ জানুয়ারী ২০২৫, ০৩:১২ পূর্বাহ্ন
বিশেষ ঘোষণা :
সময়ের সাথে সাথে প্রযুক্তিও পাল্টে যাচ্ছে ! তাই বদলাতে হচ্ছে আমাদেরও। আপনি এখন দেখতে পাচ্ছেন সিটি নিউজ পোর্টালের আপডেট ভার্সন। নতুন সাইটে আপনি আরো দ্রুততার সাথে ঝপটপ খবর পড়ে নিতে পারবেন। ২০১৬ সাল থেকে এ পর্যন্ত আমরা ছয় বার সাইট আপডেট করেছি। অনিচ্ছাকৃত ত্রুটির ক্ষমা প্রার্থণা: ওয়েব সাইটটি আপডেট করার সময় পুরনো সাইটের কমবেশি ১০ শতাংশ খবর ”ডাটালস” এর কারণে কোনও পুরনো লিঙ্ক নাও খুলতে পারে। এটা একান্তই টেকনিক্যাল গ্রাউন্ড। যে কারণে সিটি নিউজের সম্পাদকীয় বিভাগ আন্তরিকভাবে ক্ষমা প্রার্থী। সঙ্গে থাকুন।

সাব্বির হত্যা মামলার রায় আগামীকাল

জাকির খানের মুক্তি নাকি সাজা?

সিটি নিউজ / ১২ বার এই সংবাদটি পড়া হয়েছে
প্রকাশের সময় : সোমবার, ৬ জানুয়ারী, ২০২৫

রায়কে কেন্দ্র করে সর্ববৃহৎ জনসমাগমের ঘোষণা জাকির খান অনুসারীদের

বিশৃঙ্খলা এড়াতে প্রস্তুত প্রশাসন

দেশের গার্মেন্টস মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ নিটওয়্যার অ্যান্ড ম্যানুফেকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) প্রতিষ্ঠাপরিচালক ও সাবেক সহ-সভাপতি সাব্বির আলম খন্দকার হত্যার ঘটনায় ২২ বছর আগে করা মামলার রায় আগামীকাল মঙ্গলবার (০৭ জানুয়ারী) ঘোষণা করা হবে। নারায়ণগঞ্জ অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ মমিনুল ইসলাম এ রায় ঘোষণা করবেন।

জানাগেছে, রায়কে কেন্দ্র করে সর্ববৃহৎ জনসমাগমের ঘোষণা দিয়েছে জাকির খানের অনুসারীরা। এদিন আদালতপাড়ায় জাকির খানের পক্ষে প্রায় লক্ষাধীক নেতাকর্মী ও সমর্থকদের উপস্থিতি হওয়ার কথা রয়েছে। এদিকে যে কোন বিশৃঙ্খলা এড়াতে প্রস্তুত রয়েছে প্রশাসন। রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে আজ আদালতপাড়ায় নিরাপত্তা জোরদার করা হবে। এ জন্য অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হবে। এছাড়া পূর্বের যে কোন সময়ের তুলনায় পুলিশকে আরও বেশি তৎপর থাকার জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কঠোর নির্দেশনা দেয়া হয়েছে বলেও জানাগেছে।

গত ২৮ নভেম্বর এ মামলার যুক্তিতর্ক সম্পন্ন হয়। ফলে সেইদিন থেকে শুরু হয় মামলার রায়ের অপেক্ষা। আজ গোটা নারায়ণগঞ্জবাসী তাকিয়ে আছে রায়ের দিকে। তবে সেই রায়ে মামলার আসামী জাকির খানের সাজা হবে নাকি তিনি খালাস পাবেন? এমন সব প্রশ্নের উত্তর মিলবে রায় ঘোষণার মধ্যদিয়ে।

এর আগে জাকির খানের আইনজীবীরা প্রায় শতভাগ নিশ্চিৎ করেই বলেছিলেন, এ মামলায় জাকির খান বেকুসুর খালাস পাবেন। কেননা, তিনি বলেন, ছাত্রনেতা জাকির খানের উত্থানে ঈর্ষান্বিত হয়ে এবং রাজনৈতিক প্রতিহিংসাপরায়ন হয়ে তৈমুর আলম খন্দকার তার ভাইয়ের হত্যার মামলা ও বিচারকে পাশ কাটিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের উদ্দেশ্যে বিরাট এক ইতিহাস লিখে আদালতে জমা দিয়েছেন। সে ইতিহাসের পরদে পরদে ছিল মিথ্যা, ভুল ও বিভ্রান্তি ছিল। মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, আততায়ীদের হাতে তার ভাই (সাব্বির আলম) নিহত হয়েছে। সেখানে সন্দিহান হিসেবে সাবেক এমপি গিয়াস উদ্দিন, তার শ্যালক, জাকির খান ও তার গ্রুপসহ সকল বিএনপির লোকজনদের তঠস্থ রাখার জন্য আসামী করেছেন।

তিনি বলেন, এ মামলায় আদালতে যতজন সাক্ষী সাক্ষ্য দিয়েছেন তারা কেউ এ হত্যা কান্ডের সাথে জাকির খানের সম্পৃক্তার কথা বলেননি। আবার কোন কোন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ থেকে তাদেরকে জোর করে সাক্ষী বানানোর বিষয়টি উঠে এসেছে। মামলার একাধীক আইও বা তদন্ত কর্মকর্তাও জাকির খানের বিরুদ্ধে পর্যাপ্ত তথ্য প্রমাণ উপস্থাপন করতে পারেনি। সুতরাং ৭ জানুয়ারি সাব্বির হত্যা মামলার যে রায় ঘোষণা হতে যাচ্ছে, তাতে নি:সন্দেহে জাকির খান মুক্তি পাবে।

তবে একটি পক্ষ বলছেন সাব্বির হত্যায় জাকির খানের কমপক্ষে ৭ বছরের কারাদন্ড হবে। তারা বলছেন, আদালতে সাক্ষীরা ভয়ে জাকির খানের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিতে পারেনি। জাকির খান যে এ হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত এটা সবাই জানে। এতে কারোরই সন্দেহ্ থাকার কথা না। সবার মত আমরাও চাই এ হত্যা মামলার সুষ্ঠু বিচার হোক। আমরাও চাই এ হত্যাকান্ডের সাথে যেই জড়িত থাক না কেন, তার যেন বিচার হয়। কেননা, কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়।

এদিকে মামলার বাদি সাব্বির আলম খন্দকারের বড় ভাই তৈমূর আলম খন্দকার বলেছিলেন, কেউ কেউ তাকে (জাকির খান) জনপ্রিয় বলে। কিন্তু কোন ভালো কর্ম আছে তার কিংবা তার পরিবারের? একটি সন্ত্রাস দমন আইনে তার সাজা হয়েছিল। সেটা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সুপারিশে তার সাজা মওকুফ হয়।

খুনের বর্ণনা তুলে ধরে তৈমূর বলেন, অপারেশন ক্লিনহার্ট শুরু হলে এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কমার্সের একটি মিটিং হয়। সেখানে ৩২টি ব্যবসায়ী সংগঠনসহ প্রশাসনের লোকজন উপস্থিত ছিলেন। সেই মিটিংয়ে সাব্বির আলম খন্দকার নারায়ণগঞ্জের কোথায় কার নেতৃত্বে সন্ত্রাস হয়, জাকির খান ও তার সহযোগীরা কীভাবে সন্ত্রাস করে সে তথ্য তুলে ধরে। সাব্বির ঝুট সমিতির চেয়ারম্যান ছিল। যখনই তার কাছে খবর আসতো সন্ত্রাসীরা ঝুট নিতে এসেছে তখনই সে এটার মোকাবিলা করতো। এসব কারণে সাব্বিরকে খুন করা হয় বলেও জানান তৈমূর।

তবে কার বক্তব্য সত্য কিংবা সাব্বির হত্যায় সাথে জাকির খান কি সত্যিই জড়িত কি না, তা জানা যাবে কাল। আগামীকালের এ রায়ের মধ্যদিয়েই জাকির খানের ভাগ্যে নির্ধারণ হবে?

প্রসঙ্গত, ২০০৩ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারী গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন ব্যবসায়ী নেতা সাব্বির আলম খন্দকার । এ হত্যাকান্ডের পর তৎকালীন জেলা বিএনপির সভাপতি ও বর্তমান তৃণমূল বিএনপির মহাসচিব এবং নিহতের বড় ভাই তৈমুর আলম খন্দকার বাদী হয়ে সাবেক এমপি গিয়াস উদ্দিনকে প্রধান আসামি করে ১৭ জনের নামে ফতল্লা থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পর মোট ৯ জন তদন্তকারী কর্মকর্তা পরিবর্তন করা হয়। পরবর্তিতে সিআইডির এএসপি মসিহউদ্দিন দশম তদন্তকারী কর্মকর্তা দীর্ঘ প্রায় ৩৪ মাস তদন্ত শেষে তিনি ২০০৬ সালের ৮ জানুয়ারী আদালতে ৮ জনকে আসামি করে চার্জশীট দাখিল করেন। এতে মামলা থেকে সাবেক এমপি গিয়াসউদ্দিন, তার শ্যালক জুয়েল, শাহীনকে অব্যাহতি দিয়ে সাবেক ছাত্রদল সভাপতি জাকির খান, তার দুই ভাই জিকু খান, মামুন খানসহ মোট ৮ জনকে আসামি উল্লেখ করা হয়।
এ চার্জশিটে মামলার প্রধান আসামি গিয়াস উদ্দিনকে মামলা থেকে বাদ দেওয়ায় মামলার বাদী তৈমুর আলম খন্দকার চার্জশিটের বিরুদ্ধে ওই বছরের ২৪ জানুয়ারি আদালতে নারাজি পিটিশন দাখিল করেন। নারাজি পিটিশনে তৈমূর আলম বলেছিলেন, ‘গিয়াসউদ্দিনই সাব্বির আলম হত্যাকা-ের মূল নায়ক। গিয়াসউদ্দিন ও তার সহযোগীদের অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দিয়ে তদন্ত কর্মকর্তা একটি গোঁজামিলের চার্জশিট দাখিল করেছেন।’ এরপর থেকে ৫ বছরের অধিক সময় ধরে নারায়ণগঞ্জ বিচারিক হাকিম আদালতে (ম্যাজিস্ট্রেট কোর্ট) মামলার শুনানি চলে আসছিল। গত ২০১১ সালের অক্টোবর মাসে তৈমুর আলম খন্দকার আদালতে দাখিলকৃত না রাজি পিটিশনটি আবেদন করে প্রত্যাহার করে নেন। নারাজি পিটিশন প্রত্যাহারের কারণে সাবেক এমপি গিয়াস উদ্দিন এখন আর মামলায় অভিযুক্ত নেই। ফলে সিআইডি ২০০৬ সালের ৮ জানুয়ারি আদালতে যে ৮ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দিয়েছেন তার উপর ভিত্তি করেই মামলাটি পরিচালিত হচ্ছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ

বিভাগীয় সংবাদ এক ক্লিকেই