আলোচিত সাব্বির আলম খন্দকার হত্যা মামলায় নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি জাকির খান বেকসুর খালাস পাওয়ায় নারায়ণগঞ্জসহ দেশের বিভিন্নস্থানে মিষ্টি বিতরণসহ তার অনুসারিদের উচ্ছ্বাস প্রকাশ করতে দেখা গেছে। কিন্তু এবার দেশ ছাড়িয়ে এ উচ্ছ্বাস ছড়িয়ে পড়লো বিদেশের মাটিতেও। জাকির খান খালাস পাওয়ায় সদূর মালয়েশিয়ার মাটিতেও আল্লাহ’র কাছে শুকরিয়া, বিশেষ দোয়া মাহফিল ও মিষ্টি বিতরণ করতে দেখা গেছে তার অনুসারিদের।
বুধবার (০৮ জানুয়ারী) সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবদলের সাবেক সহ সাধারণ সম্পাদক মালয়েশিয়া প্রবাসী দেলোয়ার হোসেন শাহ্’র উদ্যোগে এ দোয়া ও মিষ্টি বিতরণের আয়োজন করা হয়।
দোয়াপূর্ব এক সংক্ষিপ্ত আলোচনায় দেলোয়ার শাহ্ বলেন, আমার নেতা জাকির খান নারায়ণগঞ্জে ছাত্রদলের রাজনীতির এক ইতিহাস রচয়িকা। হ্যাঁ, একমাত্র তিনি ছাত্রদলের রাজনীতি কিভাবে করতে হয়, তা গোটা নারায়ণগঞ্জবাসীসহ দেশবাসীকেও শিখিয়ে গেছেন। অন্যকোন ছাত্রনেতার সাথে তার তুলনা হয়না। আমি এ নেতার পিছনে রাজনীতি করার সুযোগ পেয়ে সত্যি নিজেকে ধন্য মনে করছি।
জাকির খানের স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, যদিও আমরা তখন বয়সে খুব ছোট ছিলাম তবুও আমাদের সৌভাগ্য হয়েছিলো খুব কাছ থেকে তার ‘নেতৃত্ব’ দেখার। আমরা তার কাছ থেকেই শিখেছি, ভয়-ডরকে উপেক্ষা করে কিভাবে বুলেটের সামনে বুক পেতে দিয়ে বজ্রকন্ঠে আওয়াজ তোলতে হয়। কিভাবে রাজপথ দখল করতে হয়। দলের জন্য জীবন বাজি রেখে কিভাবে এগিয়ে চলতে হয়। এমন সাহসী ও বলিষ্ঠ নেতৃত্বের কারণে খুব অল্পসময়ের মধ্যেই দলমত নির্বিশেষে তিনি জনপ্রিয়তা লাভ করেন। তবে এ জনপ্রিয়তার কারণে তাকে কড়া মাসুলও দিতে হয়েছিলো। বার বার ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছেন তিনি। সর্বশেষ ষড়যন্ত্র করে ওই তৈমূররা তাকে একটি মিথ্যা মামলা দিয়ে দীর্ঘ প্রায় বাইশ বছর যাবৎ হয়রানী করে আসছিলো। কিন্তু একটু দেরি হলেও সত্যের জয় হবেই। এবং বাস্তবে তাই হয়েছে। দীর্ঘ প্রায় ২২ বছর সেই মামলা থেকে আমাদের প্রাণের নেতা আমাদের আদর্শ জাকির খান বেকসুর খালাস পেয়েছেন। তিনি খালাস পাওয়ায় আমাদের মালয়েশিয়ার মত জাপান, জার্মান, ইটালি, সৌদি আরব, বাহারাইন, দুবাই, কুয়েত ও ওমেনসহ প্রায় ২০টিরও অধিক দেশে বাঙালি প্রবাসীরা মিষ্টি বিতরণ করে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করছেন। আমি এ জন্য সর্ব প্রথম পরম করুনাময় আল্লাহ্’র দরবারে শুকরিয়া আদায় করছি। পাশাপাশি দোয়া করছি, তিনি যেন আমার নেতাকে সব সময় ভালো ও সুস্থ রাখেন। আমিন।
বক্তব্য শেষে জাকির খান বেকসুর খালাস পাওয়ায় আল্লাহ্’র কাছে শুকরিয়া ও দোয়া অনুষ্ঠিত হয়। দোয়া শেষে উপস্থিত নেতাকর্মীদের মাঝে মিষ্টি বিতরণ করা হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন, জেলা যুবদলের সাবেক নেতা প্রবাসী গোলাপ আহমেদ, জেলা ছাত্রদলের সহ-সভাপতি প্রবাসী রহিম খান হোসেন সরকার, সদস্য আব্দুল আল মামুন, ইসমাইল খান বাবু, চঞ্চল আহমেদ, ইমরান হোসেন ও মুনিয়ান হোসেন রাহাতসহ আরও প্রবাসী নেতা। পরে দেলোয়ার শাহ্’র নির্দেশে প্রবাসী নেতারা মালয়েশিয়ার নিলাই, কেএল, পেনাং ও জোহরবারুসহ প্রায় ১০টিও অধিকস্থানে মিষ্টি বিতরণ করেন।
প্রসঙ্গত, ৭ জানুয়ারি বিকেএমইএ’র সাবেক সহ-সভাপতি সাব্বির আলম খন্দকার হত্যা মামলায় নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি জাকির খানসহ সব আসামীকে খালাস দেন আদালত। অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক মমিনুল ইসলাম এ রায় ঘোষণা করেন। খালাস পাওয়া অন্য আসামীরা হলেন জাকির খানের দুই ছোট ভাই জিকু খান ও মামুন খান, তাঁর সহযোগী জঙ্গল ওরফে লিটন, মোক্তার হোসেন, মনিরুজ্জামান শাহীন, নাজির আহমেদ ও আবদুল আজিজ। তাঁদের মধ্যে মনিরুজ্জামান শাহীন মারা গেছেন।