সকল জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে পূর্ণাঙ্গ রূপ পেলো নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের আহ্বায়ক কমিটি। নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির কমিটি বিলুপ্তি হওয়ার পর দলের একাংশ নেতাকর্মীরা ধারণা করেছিলো যে, হয়তো জেলা বিএনপির মতই বিলুপ্ত করা হতে পারে মহানগর যুবদল ও বিএনপির কমিটি। কিন্তু নেতাকর্মীদের সেই ধারণা পাল্টে দিলো কেন্দ্র। কমিটিতো বিলুপ্তি করা হলোই না, বরং পূর্ণাঙ্গ করা হলো মহানগর যুবদলের আহ্বায়ক কমিটি। এতেই প্রমাণ হলো যে, মহানগর যুবদলের আহ্বায়ক মনিরুল ইসলাম সজল ও সদস্য সচিব সাহেদের প্রতি পূর্ণাঙ্গ আস্থা রয়েছে কেন্দ্রের।
এদিকে মহানগর যুবদলের আহ্বায়ক কমিটি পূর্ণাঙ্গ হওয়ার পর গুঞ্জন শুরু হয়েছে মহানগর বিএনপির কমিটি নিয়ে। এতদিন বিদ্রোহীদের ধারণা ছিলো জেলা বিএনপির মত খুব শীঘ্রই বিলুপ্ত করা হবে মহানগর বিএনপির কমিটিও। কিন্তু সজল-সাহেদের যুবদলের কমিটি পূর্ণাঙ্গ হওয়ায় তাদের কপাঁলে অনেকটাই চিন্তারভাজ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। তারা এ নিয়ে আপাতত কোন ধরণের মন্তব্য না করলেও এটা স্পষ্ট বুঝাযাচ্ছে যে, তারা এ নিয়ে খুব বেশি চিন্তিত। কেননা, যদি যুবদলের মত মহানগর বিএনপির কমিটিও পূর্ণাঙ্গ করা হয় তাহলে এটা হবে তাদের জন্য খুবই লজ্জাজনক। এবং অধির ভবিষ্যতে তাদের রাজনীতি নিয়েও শঙ্কা দেখা দিবে। তাই বর্তমানে অনেকটাই সর্তকাবস্থায় রয়েছে মহানগর বিএনপির বিদ্রোহীরা।
দলীয় সূত্রে জানাগেছে, মহানগর যুবদলের মতই অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান ও অ্যাডভোকেট আবু আল ইউসুফ খান টিপুর উপর অবিচল আস্থা রয়েছে কেন্দ্রের। বিশেষ করে ৫ আগস্টের পর তাদের একের পর এক জনকল্যানমূলক কাজ সেই আস্থাকে আরও বেশি টেকসই করে তোলেছে। যারফলে দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পছন্দের প্রথম তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে সাখাওয়াত-টিপু তথা মহানগর বিএনপি। দেশের বেশ কিছু জেলার মহানগর কমিটি নিয়ে তারেক রহমান অনেকটাই চিন্তিত হলেও নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির কার্যক্রম নিয়ে তিনি খুবই সন্তুষ্ট।
জানাগেছে, শেখ হাসিনা সরকারের পতন হওয়ার পর থেকে নারায়ণগঞ্জে একের পর এক ইতিবাচক কর্মকান্ডের মাধ্যমে জনগণের সঙ্গে সম্পৃক্ততা বাড়াতে সক্ষম হয় মহানগর বিএনপি। বিশেষ করে হাসিনার পতনের সঙ্গে সঙ্গে নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন স্থানে জ্বালাও-পোড়াও ও ভাঙচুরসহ বিভীষিকাময় পরিস্থিতি তৈরি হয়। বিভিন্ন স্থানে চুরি-ডাকাতিসহ দ্বন্দ্ব-সংঘাত মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে। হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়ীঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, লুটপাটের ঘটনাও ঘটে। এসব নৈরাজ্য প্রতিরোধ, জনমনে স্বস্তি ফেরানো এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে নানামুখী উদ্যোগ নেয় অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান ও অ্যাডভোকেট আবু আল ইউসুফ খান টিপু। ছাত্র আন্দোলনে আহতদের খোঁজ নেওয়া ও মন্দির পাহারার পাশাপাশি শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষার্থে জনসচেতনতার জন্য নানা কর্মসূচি পালন করে দলটি। এমনকি ডাকাতি ঠেকাতে রাত জেগে বিভিন্ন অলিগলিতে এবং ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের উপাসনালয় পাহারা দেন সাখাওয়াত-টিপুর নেতৃত্বে মহানগর বিএনপির নেতাকর্মীরা। শহরের বঙ্গবন্ধু সড়কসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় ট্রাফিক কাজে নিয়োজিত ছাত্রছাত্রীদের মাঝে খাবার পানি, দুপুরের খাবার বিতরণসহ বিভিন্ন সেবামূলক কর্মকা- অব্যাহত রাখে তারা। শুধু তাই নয়, বর্তমানে তারা তারেক রহমানের নির্দেশে আরও জনসম্পৃক্ততা বাড়ানোর জন্য ৩১ দফা দাবির লিফলেট ও শীতবস্ত্র নিয়ে ছুটে বেড়াচ্ছেন গোটা মহানগরী এলাকা। মহানগরীর প্রতিটি ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে গিয়ে জনগণের কাছে তোলে ধরছেন দলটির ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথা। এভাবে জনপ্রিয়তা ও জনআস্থা অর্জন করতে অবিরাম কাজ করে চলেছেন সাখাওয়াত-টিপুরা। যারফলে বর্তমানে পূর্বে যে কোন সময়ের তুলনায় মহানগর বিএনপির বেড়েছে জনপ্রিয়তা ও সাংগঠনিক দক্ষতা। যা আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে একটি ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এদিকে ৫ আগস্টের পর গোটা দেশের জেলা ও মহানগরসহ ইউনিট বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের প্রতিটি নেতাকর্মীদের প্রতি কঠোর দৃষ্টি রাখেন দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। যারফলে বির্তকীত কর্মকান্ড করার সাথে সাথে দেশের বিভিন্ন জেলা ও মহানগর কমিটি বিলুপ্তিসহ অসংখ্য বিএনপি নেতাদের দল থেকে বহিস্কার করা হয়। এসব বির্তকীত কর্মকান্ডের অভিযোগে সম্প্রতি বিলুপ্ত করা হয় নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপি, জেলা ও মহানগর ছাত্রদলের কমিটি। এসব কমিটি বিলুপ্ত করার পর সবার নজর পড়ে মহানগর বিএনপির দিকে। ধারণা করা হচ্ছিলো, হয়তো এ কমিটিও বিলুপ্ত করা হবে। কিন্তু ৫ আগস্টের পর থেকে সাখাওয়াত-টিপুদের একের পর এক জনকল্যানমূলক কর্মকান্ড তাদের দক্ষতা প্রমাণে সফল করে তোলেছে। যারফলে তাদের ভালো কাজের মুগ্ধতা ছড়িয়ে পড়ে কেন্দ্র থেকে তারেক রহমান পর্যন্ত। তারেক রহমান তাদের কর্মকান্ডে সন্তুষ্ট হওয়ার কারণেই এখনও বহাল রয়েছে মহানগর বিএনপির কমিটি। ধারণা করা হচ্ছে, খুব শীঘ্রই সাখাওয়াত-টিপুদের নেতৃত্বেই পূর্ণাঙ্গ করা হবে মহানগর বিএনপির কমিটি।