বাংলাদেশ হোসিয়ারী অ্যাসোসিয়েশনের নির্বাচনে দুটি প্যানেল অংশগ্রহণ করে। একটি প্যানেলের নেতৃত্বে ছিলেন অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি বদিউজ্জামান বদু। আর অপর প্যানেলের নেতৃত্বে ছিলেন মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায় ফতেহ মোহাম্মদ রেজা রিপন।
এদিকে রিপনের পক্ষে কাজ করে মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান ও সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট আবু আল ইউসুফ খান টিপু। তারা রিপন প্যানেলকে বিপুল ভোটে নির্বাচিত করার জন্য হোসিয়ারী ব্যবসায়ী তথা ভোটারদের প্রতি আহ্বান জানান। চেষ্টা করেন নানা কূটকৌশলে রিপন প্যানেলকে বিজয়ী করার জন্য। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাদের সেই কূটকৌশলী কোন কাজেই আসেনি। রীতিমত বোল্ড আউট হয়ে বাড়ী ফিরতে হয়েছে রিপনকে। রিপনসহ তার প্যানেলের মাত্র ৩ জন বিজয়ী হলেও বাকীসব প্রার্থীরা ধরাশায়ী হয় বদু প্যানেলের কাছে।
সোমবার (০৩ ফেব্রুয়ারী) নারায়ণগঞ্জ ক্লাবে সকাল থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত চলে বাংলাদেশ হোসিয়ারি অ্যাসোসিয়েশনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।
এবারের এ নির্বাচনে মোট ১ হাজার ১’শ তেরো জন ভোট প্রয়োগ করেন। ১৮জন পরিচালকের মধ্যে বদু প্যানেলেরই ১৫ জন পরিচালক প্রার্থী বিজয়ী হন। বাকি তিন পরিচালক পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী রেজা রিপনসহ ৩জন নির্বাচিত হয়। বদু প্যানেলের নির্বাচিতরা হলেন, সাধারণ গ্রুপের বদিউজ্জামান বদু, মোঃ আব্দুল হাই, মিজানুর রহমান, মোঃ পারভেজ মল্লিক, আবদুস সবুর খান, মনির হোসেন, হাজী মোঃ শাহিন হোসেন, আতাউর রহমান, দুল্লাল মল্লিক, মোঃ মাসুদুর রহমান ও বৈদ্যনাথ পোদ্দার। এসোসিয়েট গ্রুপে সাইফুল ইসলাম হিরু, সাঈদ আহম্মেদ স্বপন, মোঃ নাছির শেখ, ও নাছিম আহম্মেদ।
নির্বাচন কমিশন তথ্যমতে, নির্বাচনে হোসিয়ারী মালিক ঐক্যজোট প্যানেল থেকে আলহাজ্ব বদিউজ্জামান বদু (বদিউজ্জামান টেক্সটাইল) ৮৯৩ ভোট, মোঃ আবদুল হাই (নিউ বৃষ্টি টেক্সটাইল) ৮২৭ ভোট,মোঃ মিজানুর রহমান (সায়মন হোসিয়ারী) ৮০৫ ভোট, মোঃ পারভেজ মল্লিক (নিউ লিপি হোসিয়ারী এন্ড গার্মেন্টস)৭৮৭ ভোট, আবদুস সবুর খান (সাকলাইন টেক্সটাইল) ৭৮৩ ভোট, হাজী মোঃ শাহীন হোসেন (শাহীন ট্রেডার্স) ৭৫১ ভোট, মোঃ আতাউর রহমান (গনি হোসিয়ারী এন্ড গার্মেন্টস) ৭২৭ ভোট,আলহাজ্ব মোঃ মনির হোসেন (নিউ মনির হোসিয়ারী) ৭২০ ভোট,মোঃ দুলাল মল্লিক (আদর ট্রেডার্স) ৬৯০ ভোট, মোঃ মাসুদুর রহমান (আবীর ফ্যাশন) ৬০৫ ভোট ও বৈদ্যনাথ পোদ্দার (নিউ দূরস্থ হোসিয়ারী) ৫৭২ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। এছাড়া স্বতন্ত্র হোসিয়ারী মালিক ঐক্য ফোরাম থেকে ফতেহ মোহাম্মদ রেজা (ফতেহ হোসিয়ারী) ৬৭০ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন।
এসোসিয়েট গ্রুপ থেকে ৬ জন নির্বাচিত হয়েছেন। হোসিয়ারী মালিক ঐক্যজোটের প্যানেল থেকে সাইফুল ইসলাম হিরু শেখ (নিউ শেখ হোসিয়ারী) ৮৬২ ভোট, সাঈদ আহমেদ স্বপন (সেহেলী হোসিয়ারী এন্ড গার্মেঃ) ৭১৯ ভোট, আলহাজ্ব মো. নাছির শেখ (নাছির হোসিয়ারী) ৭০২ ভোট, নাছিম আহমেদ (গাজী হোসিয়ারী) ৪৯৮ ভোট।
এছাড়া স্বতন্ত্র প্রতিদ্বন্দ্বীতা করে নির্বাচিত হয়েছে আবদুস সোবহান তালুকদার (আদর হোসিয়ারী) ৫৭৫ ভোট, মো. বিল্লাল হোসেন (সেভেন স্টার হোসিয়ারী) ৪৯৫ ভোট পেয়ে।
এদিকে এ বিজয়কে অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত ও টিপুর বিরুদ্ধে বিজয় বলে ঘোষণা দিয়েছেন বদু প্যানেলের একাধীক বিজয়ী প্রার্থী। তারা বলেছেন, নির্বাচন শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত এ নির্বাচনকে থামিয়ে দেয়া এবং রিপন প্যানেলকে বিজয়ী করতে বহু ষড়যন্ত্র করেছিলো সাখাওয়াত-টিপুরা। কিন্তু ভোটাররা তাদের সেই ষড়যন্ত্রকে নষ্যাৎ করে দিয়েছে। আমরা মনেকরি, ভোটারদের এ রায় সাখাওয়াত-টিপুদের বিরুদ্ধে রায়। তারা বদু প্যানেলেকে বিজয়ী করে মূলত সাখাওয়াত-টিপুদের প্রত্যাখ্যান করেছেন।
সাখাওয়াত-টিপুদের সাবধান করে দিয়ে তারা আরও বলেন, অধির ভবিষ্যতে ষড়যন্ত্র করার আগে একটু ভেবেচিন্তে করবেন। আগে জানবেন, কার কেমন জনপ্রিয়তা আর কার উপর ভোটারদের আস্থা বেশি। যদি এসব বিষয়গুলো চিন্তা করে পথ চলেন, তাহলে চলতে পারবেন। নয়তো, জনগণই আপনাদের পথে বাধা হয়ে দাঁড়াবে। তাই এখনও সময় আছে সাবধান হয়ে যান, ভালো মানুষের সাথে চলুন।